উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে ফখরুল মিথ্যাচার করেছেন: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ছেড়ে দেয়া ছয় আসনে উপনির্বাচনে ২৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বুধবারের (১ ফেব্রুয়ারি) উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিথ্যাচার করেছেন। মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে তিনি জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করেছেন।’

গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের ‘মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে দেয়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে তিনি এ বিবৃতি দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিনি (মির্জা ফখরুল) বিএনপির করা এক হিসাব তুলে ধরে বলেছেন, উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি পাঁচ শতাংশের বেশি হয়নি, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। মির্জা ফখরুল হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে এ ধরনের নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে প্রচণ্ড শীত ও প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভোটাররা এ উপনির্বাচনেও ভোট দিতে এসেছিলেন। সব উপনির্বাচনে ২৫ শতাংশের বেশি ভোটার ভোট দিয়েছেন। এমনকি ঠাকুরগাঁও-৩ আসনেও ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪৫ শতাংশের মতো।’

তিনি বলেন, ‘উপনির্বাচনে যেহেতু সরকার পরিবর্তনের কোনো ব্যাপার থাকে না, তাই জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় এটা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ কম থাকে। স্পষ্টভাবে বলা যায়, জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি আরও বাড়বে এবং মানুষ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দেবে।’

আওয়ামী লীগ সবসময় দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে দুর্নীতি বিএনপির মজ্জাগত বিষয়। দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তারেক রহমানের নেতৃত্বে হাওয়া ভবন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। তাদের দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার অঙ্গীকার ছিল উন্নয়ন ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে সরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যেখানে সারাবিশ্বে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, সেটা বিবেচনায় না নিয়ে মির্জা ফখরুল অর্বাচীনের মতো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির দায় সরকারের ওপর চাপানোর অপচেষ্টা করছেন। দেশবাসী ভালো করেই জানে, যাদের রাজনৈতিক উত্থান গণবিরোধী পন্থার সিঁড়ি বেয়ে, তারা সবসময় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ফায়দা নেয়ার অপচেষ্টা করবেন। হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যারা গণতন্ত্রের কফিনে পেরেক ঠুকেছেন, তাদের মুখে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা শোভা পায় না। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই দেশের গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়েছে।’

বিএনপি ষড়যন্ত্রের নীলনকশা সাজাচ্ছে বলে অভিযোগ করে কাদের বলেন, ‘মানবাধিকার হরণ, সংখ্যালঘু হত্যা ও বিরোধী দল-মত দমন বিএনপির রাজনৈতিক চরিত্র। মিথ্যাচার তাদের একমাত্র হাতিয়ার। আন্দোলনে জনগণের সাড়া না পেয়ে বিএনপি নেতারা এখন ষড়যন্ত্রের নীলনকশা সাজাচ্ছেন। দেশের জনগণ সেটা বুঝতে পেরেই তাদের আন্দোলনে সাড়া দেয়নি।’

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ বলে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বর্তমান সময়কে ধারণ করেই ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা দেন। তার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। একইসঙ্গে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে জাতির সামনে তিনি রূপরেখা তুলে ধরেছেন। ন্যায্যতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।’