নিজস্ব প্রতিবেদক: এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে কভিড-১৯-পরবর্তী ছোট আকারে কর্মসংস্থানে ঋণ সহায়তা প্রকল্পের (সাপোর্টিং পোস্ট কভিড স্মল স্কেল এমপ্লয়মেন্ট ক্রিয়েশন প্রজেক্ট) নামে একটি ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রকল্পের আওতায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশ ফেরত প্রবাসী কর্মীদের ঋণ নেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। কিন্তু তাদের ডেটাবেজ না থাকায় অর্থায়নে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন আটটি প্রতিষ্ঠান এবং ঋণ চুক্তিতে অংশ নেয়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গতকাল সোমবার বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈঠকে বিদেশ ফেরতদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের ডেটাবেজ ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, মহামারি কভিড-১৯-এর ফলে অর্থনৈতিক যে প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রভাবকে কাটিয়ে উঠতে কুটিরশিল্প এবং ক্ষুদ্র ও ছোট ব্যবসার অর্থ সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে এডিবি থেকে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে। এ ঋণ সুবিধা শুধু করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশ ফেরত প্রবাসী, ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সের মধ্যে বেকার যুবক ও নারী উদ্যেক্তা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরের গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিতরণের সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রকল্প থেকে মাত্র সাড়ে পাঁচ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন সুবিধাভোগীরা। কর্মসংস্থানের মাধ্যমে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অরক্ষিত জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করাই এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এডিবির হেডকোয়ার্টার্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ১৪ নভেম্বর প্রকল্পটির কার্যক্রম এবিবির বাংলাদেশ রেডিডেন্ট মিশনের (বিআরএম) কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে।
গতকাল এ প্রকল্পের ঋণ বিতরণের অগ্রগতি ও সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কনফারেন্স রুমে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিদেশ ফেরত প্রবাসী কর্মীদের নিয়ে কাজ করে এমন আটটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ছাড়াও বিআরএম এবং অংশগ্রণকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জানানো হয়, এ প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ৯৯ কোটি ৯৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ৪৬০ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে ২৮৬ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রায় ১২১ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন আবেদন বিবেচনাধীন রয়েছে।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এবিবির বাংলাদেশ রেসিডেন্ট মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. খুরশিদ আলম। এ সময় টার্গেট গ্রুপের অন্যতম বিদেশ ফেরত প্রবাসী কর্মীদের অর্থায়ন সমস্যার বিষয়টি উঠে আসে। আর অর্থায়ন সমস্যার মূল কারণ হিসেবে বিদেশ ফেরত প্রবাসী কর্মীদের ডেটাবেজ সংকট এবং তাদের অনুকূলে ঋণ বিতরণে সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়।