আ.লীগ-বিএনপির আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে ফের মুখোমুখি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে সেøাগান দিয়েছেন। বিকাল ৪টার দিকে তারা এ মুখোমুখি অবস্থান নেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উভয় পক্ষ একে অপরের উদ্দেশে নানা ধরনের সেøাগান দিচ্ছিলেন।

এর আগে এ নির্বাচন ঘিরে গত বুধবার দুপুর ১২টার দিকে আইনজীবীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ওই সময়ও দুই দলের সমর্থক আইনজীবীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দ্বিতীয় দিনের ভোট গতকাল সকাল ১০টার পর শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটকেন্দ্রে দুই দলের আইনজীবীরা এসে জড়ো হন।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা জোরে জোরে সেøাগান দিতে থাকেন। একদল ‘ভোট চোর, ভোট চোর’ বলে সেøাগান দিতে থাকে। অন্য পক্ষ আবার এর উত্তর দিতে থাকে।

এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এ সময় তুমুল উত্তেজনা শুরু হয়। পুলিশও মাঝে দাঁড়িয়ে সতর্ক অবস্থায় থাকে। তবে

 এ সময় ভোট গ্রহণ চলছিল।

নির্বাচন কেন্দ্র করে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। গতকাল নির্বাচনের দ্বিতীয় দিন দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য অবস্থান নেন।

গত বুধবার আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের (২০২৩-২৪) প্রথম দিনে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। দিনের শুরুতে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়।

অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বুধবার আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ ও নির্যাতনের ঘটনা প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছে বিএনপির নীল প্যানেল। প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

গতকাল সকাল সোয়া ৯টায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে এজলাসে আসন গ্রহণ করেন আপিল বিভাগের ৮ বিচারপতি। এ সময় গত বুধবার ঘটে যাওয়া পুলিশের হামলা ও মামলার কথা তুলে ধরেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। পাশাপাশি আইনজীবীদের নিরাপত্তা চান তিনি।

পরে প্রধান বিচারপতিকে সম্বোধন করে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘আমরা আপনার আদালতের আইনজীবী। আপনি আমাদের অভিভাবক। আমরা কী এমন অপরাধ করেছি? গতকাল পুলিশ আইনজীবীদের নির্যাতন করল। এ থেকে নারী আইনজীবীরাও রেহাই পাননি। আমি পুলিশকে বলেছি, আমি সম্পাদক প্রার্থী। তারপরও আমাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বের করে দেয়া হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। বার ভবনে আমাদের কক্ষগুলো লক করে দেয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা আপনাদের কাছে এসেছি।’

ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আমি নিজেও পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আজও আমি ভালো করে হাঁটতে পারছি না। গত বুধবার মিলনায়তনের ভেতরে আইনজীবীদের পায়ের নিচে ফেলে নির্যাতন করেছে পুলিশ। সাংবাদিক ও নারী আইনজীবীদেরও লাঠিচার্জ করা হয়েছে।’

এ সময় বিএনপির আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আপনারা কোর্ট অফিসার। আমরা আপনাদের সম্মান করি। এখন আদালতে মামলা শুনব। আপনারা দুজন (ব্যারিস্টার খোকন ও কাজল) বেলা ১১টার সময় খাস কামরায় আসুন। আপনাদের কথা শোনা হবে। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে আনব।’