নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, ইভিএম নিয়ে কী হবে না হবে, জানি না। উই আর ইন ডার্ক (আমরা অন্ধকারে)। গতকাল সোমবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আনিছুর রহমান বলেন, ‘গত ১৫ মার্চের কমিশন বৈঠকে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটা চিঠি দেয়ার জন্য বলেছি। ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামতের জন্য ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকার মতো লাগবে। সেটা পাওয়া যাবে কি না, নিশ্চিত করার জন্য আমরা একটি চিঠি দিতে বলেছি। চিঠিটি প্রস্তুত রয়েছে। মঙ্গলবার চিঠিটি দেয়া হতে পারে।’
কেন এই চিঠি দিচ্ছেনÑএমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও টাকার নিশ্চয়তা পাইনি। কাজেই টাকার নিশ্চয়তা না হলে আমরা চিঠি দেব। টাকার নিশ্চয়তা যদি পাওয়া যায়, আমরা এই অর্থবছরে অর্ধেক দেয়ার জন্য ও পরবর্তী অর্থবছরে বাকিটা দেয়ার জন্য একটা প্রস্তাব পাঠাচ্ছি। যদি অর্থ বিভাগ টাকার সংস্থান করে তাহলে আমরা ইভিএমের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে উপনীত হবো। অন্যথায় যদি টাকা না পাওয়া যায় তাতেও আমাদের সিদ্ধান্তে আসতে হবে; কী করব। মানে ব্যালটে কত আসনে নির্বাচন করব বা আদৌ ইভিএমে নির্বাচন করব কি না। কাজেই সবটাই নির্ভর করবে অর্থ প্রাপ্তির ওপর।’
কবে নাগাদ এই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেনÑএমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তো একেবারে অনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বসে থাকতে পারব না। আমরা যদি টাকা হাতে পাই… তাতে ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ) বলেছে যে মেরামত করার জন্য তাদের ছয় মাস সময় দিতে হবে। কাজেই আমরা তো মনে করি এখনই হাই টাইম।’
‘টাকা পাওয়া বা না পাওয়ার (চিঠির জবাব) ব্যাপারটি যদি আমরা আগামী কিছুদিনের মধ্যে কিংবা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিশ্চিত হতে পারি তাহলে হাতে ছয় মাস সময় পাব। অন্যথায় কিন্তু সময় পাব না। ছয় মাস সময়ের পর টাকা দিলে তো আমাদের লাভ হবে না। কারণ ১ লাখ ১০ হাজার মেশিন যদি আমরা ব্যবহারযোগ্য করতে পারি তাহলে ৭০-৮০ আসনে ইভিএমে নির্বাচন করতে পারব। তা না হলে তো পারব না। সে ক্ষেত্রে কী করা হবে তখন সিদ্ধান্ত নেব। আশা করছি সরকার হয়তো টাকার ব্যবস্থা করবে। কীভাবে করবে তা…।’
‘এখনও সরকার তো পুরোপুরি না করেনি। আমরা এটুকু ইঙ্গিত পেয়েছিলাম যে টাকার একটা ব্যবস্থা হবে। আর যদি না দেয়, সে জন্যই সর্বশেষ চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
সরকার কোনো বরাদ্দ না দিলে কী করবেনÑএমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তখন আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এটা আবার কমিশনে আসবে, কমিশন তখন যে সিদ্ধান্ত নেবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। সেটা এখন বলার সুযোগ নেই।’
কতগুলো আসনে ইভিএমে নির্বাচন করতে পারবেনÑএমন প্রশ্নের জবাবে আনিছুর রহমান বলেন, ‘সেটাও আমরা এখন পর্যন্ত পর্যালোচনা করে দেখিনি। যেগুলো (ইভিএম) আমাদের হাতে আছে, সেগুলোসহ ১ লাখ ১০ হাজার মেরামতযোগ্য। আরও ৪০ হাজার মেরামত করলেও সবগুলো আসনে ব্যবহারযোগ্য হবে না। কাজেই আমরা ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএমই মেরামত করব। আর যদি আংশিক পাওয়া যায় (অর্থ), সেটা তখনকার ওপর নির্ভর করবে।’