রেস্তোরাঁ মালিকদের হুশিয়ারি

অপপ্রচার হলে আইনের আশ্রয় নেয়া হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি রেস্তোরাঁ খাত নিয়ে কিছু নেতিবাচক প্রচারণার কারণে এ খাত কিছুটা সংকটে পড়ে। এসব প্রচারণা মিথ্যা প্রমাণিত হলে আইসিটি আইনে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। তাছাড়া সরকারি বিভিন্ন সংস্থার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধি রাখার দাবি জানান তারা। একই সঙ্গে বিভিন্ন আইনের জামিন অযোগ্য ধারা ও বিধি বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গতকাল আয়োজিত ‘দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতিতে রমজানে রেস্তোরাঁয় ন্যায্য মূল্যে স্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি, বিভিন্ন নেতিবাচক প্রচারণা এবং সরকারি সংস্থার অভিযানের নামে হয়রানি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। একই সঙ্গে তিনি ৮ দফা দাবি জানান।

ইমরান হাসান বলেন, হাইকোর্টের অনেক নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অযাচিতভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলছে। আমরা মোবাইল ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিরুদ্ধে নই, তবে এটি চলতে হবে যৌক্তিকভাবে। আর কালা-কানুন বাদ দিতে হবে।

সংগঠনটি বলছে, ১২টি অধিদপ্তর আমাদের পর্যবেক্ষণ করছে। একটি অধিদপ্তরের অধীনে কাজ করতে চায় তারা। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার ভ্রাম্যমাণ আদালতে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির প্রতিনিধি রাখতে হবে। অযাচিতভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা বন্ধ করতে হবে।

ইমরান হাসান বলেন, অধিদপ্তরগুলো বিক্ষিপ্তভাবে তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপ বা ক্ষোভ ঝাড়ছে রেস্তোরাঁ মালিকদের ওপর। পান থেকে চুন খসলেই কোনো বিশেষজ্ঞ লোক ছাড়াই যে যেভাবে পারছে জরিমানার নামে ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাদের ব্যবসার সুনাম নষ্ট এবং আর্থিক ক্ষতিসাধন করছে। এভাবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, রেস্তোরাঁ খাতের ৯৫ শতাংশ কর্মী অদক্ষ ও স্বল্প-শিক্ষিত। তাদের আগে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। আমাদের একটি গ্রহণযোগ্য এসওপি প্রদান করতে হবে। কোনো সংস্থাই সু-নির্দিষ্ট কোনো এসওপি দেয়নি এখনও।

অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, করোনা মহামারিতে প্রায় ৩০ শতাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়েছে। যারা টিকে আছে তারাও ধুঁকে ধুঁকে চলছে। এ অবস্থায় ব্যবসায় টিকে থাকতে সরকারের সহযোগিতা জরুরি। তারা বলেন, চড়া মূল্যস্ফীতিতে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। সব মিলিয়ে রাজার নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে রেস্তোরাঁ খতিটি বড় সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বর্তমানে রেস্তোরাঁ খাতে ভ্যাট ও ট্যাক্স হচ্ছেÑএসি ও নন এসি রেস্তোরাঁ ওপর ৫ শতাংশ। ভ্যাটের হার হতে হবে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ এবং ট্যাক্সের হার হবে সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। রেস্তোরাঁ খাতে গ্যাস সরবরাহ বৃদ্ধি করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। অবিলম্বে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে লাইন ট্রান্সফার এবং নাম পরিবর্তনের সব প্রতিবন্ধকতা তুলে নিতে হবে। রমজানে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য প্রতি বছরই দেখা যায়। এদের হাইজেনিক বা নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে কোনো জ্ঞান নেই, এই বিষয়ে নজর দেয়া অতীব জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি ওসমান গনিসহ অন্যরা।