সপ্তাহের শুরুতে মুনাফা সংগ্রহে বিক্রির চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে প্রধান প্রধান সূচক পতনের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার লেনদেন শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমে ৫০০ কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ও শেয়ার কেনার চাপ বেশি ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ারে। ফলে খাতটি দর বৃদ্ধির শীর্ষে ছিল। এদিন বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির চাপ বেশি ছিল পাট খাতের শেয়ারে। ফলে খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। আর এ পতন মুনাফা সংগ্রহের চাপে হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ আগের সপ্তাহে এ খাতের শেয়ারদরে বড় উত্থান হয়েছে। তাই সপ্তাহের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা সংগ্রহের চাপ বেড়েছে বলে জানান তারা।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল ভ্রমণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ১ দশমিক ২০ শতাংশ। খাতটিতে মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ১টির দর বেড়েছে এবং ২টির দর অপরিবর্তিত ছিল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ট্যানারি খাতের শেয়ার। এ খাতের দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ। খাতটিতে মোট ৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ৪টির দর বেড়েছে এবং ১টির কমেছে। শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করে দর বেড়ে তৃতীয় স্থানে ছিল ব্যাংক খাতের শেয়ার। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, সিমেন্ট, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের মুনাফা সংগ্রহের চাপ থাকায় পাট খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ৪ শতাংশ। কিন্তু আগের সপ্তাহে খাতটিতে শেয়ারদর বেড়েছে ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। এরপরের স্থানে থাকা সেবা ও আবাসন খাতের শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৪০ শতাংশ। ১ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত।

অন্যদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আইটি খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ভ্রমণ খাতে লেনদেন হয়েছে ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। ৮ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হওয়া ট্যানারি খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে ৪৯৮ কোটি ৮১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৬১২ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২১৪ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসইএস সূচক দশমিক ১৮ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৪৮ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্টে এবং ২ হাজার ২০০ দশমিক ১৫ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৪০টি এবং কমেছে ৭৫টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ২১৪টির।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবসে ৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১১৭টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ২৮টির, কমেছে ৩৮টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৫১টির।

এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৪ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩০৯ দশমিক ২৯ পয়েন্টে। সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ২৭ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১২ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট ও সিএসসিএক্স ২ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৩ দশমিক ৫০ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৩৮৩ দশমিক ৬৬ পয়েন্টে ও ১০ হাজার ৯৭৫ দশমিক ২৪ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসআই সূচক দশমিক শূন্য ১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৫০ দশমিক ৩৬ পয়েন্টে।