প্রতিনিধি, যশোর: যশোরে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবির) ভর্তুকির পণ্য বিক্রি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। পণ্য সংকটের কারণে গত এপ্রিল মাসে জেলার ৩ উপজেলায় শুধু তেল ও ডাল দিয়ে টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হলেও এখনও পর্যন্ত ৫ উপজেলার সুবিধাভোগীরা কোনো মালামাল ক্রয় করতে পারেনি। যশোর সদর উপজেলায় আজ মঙ্গলবার টিসিবি পণ্যে বিক্রির কথা থাকলেও তেলের সংকটের কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ টিসিবি ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সারাদেশে নির্দিষ্ট সংখ্যক লোকের মাধ্যমে ৬০ টাকা দরে এক কেজি চিনি, ১১০ টাকা দরে দুই লিটার সয়াবিন তেল ও ৭০ টাকা কেজি দরে দুই কেজি মসুর ডাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।
এ কর্মসূচির আওতায় যশোরে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৩৯ জন কার্ডধারী সুবিধাভোগীর মধ্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি চলমান থাকলেও হঠাৎ পণ্য সংকটের কারণে তা বন্ধ রাখা হয়েছে। ৭৩ জন ডিলার প্রতিনিয়ত মালামালের জন্য টিসিবির গুদামে যোগাযোগ করলেও সেখান থেকে কোনো মালামাল বরাদ্দ পাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যশোর শহরের নীলগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা টিসিবির ডিলার রফিকুল ইসলাম বলেন, গত এপ্রিল মাসের ১৮ তারিখে সর্বশেষ যশোর সদর ও পৌরসভা এলাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়। তবে এ সময়ে চিনি বাদে শুধু তেল ও ডাল বিক্রি করা হয়। কিন্তু চলতি মাসের মালামাল ৩০ তারিখে বিতরণ করার কথা থাকলেও এখনো আমরা কোনো মালামাল তুলতে পারেননি তারা। টিসিবির পণ্য ভাণ্ডার থেকে বলা হচ্ছে তেল না আসা পর্যন্ত কোনো মালামাল দেয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, বাজারে চিনির দাম বেড়ে যাওয়া টিসিবির বিক্রয়মূল্যে সামনে চিনির দাম বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট জায়গা থেকে আমাদের জানানো হয়েছে। তবে মালামাল না তোলা পর্যন্ত কত টাকা বাড়বে সেটি বোঝা যাচ্ছে না বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে জেলা ত্রাণ পুনর্বাসন কর্মকর্তা মুহাম্মাদ রিজিবুল ইসলাম বলেন, চলতি মে মাসের বরাদ্দ হওয়া মালামালের মধ্যে যশোরের ৮ উপজেলার মধ্যে ইতোমধ্যে শুধু চৌগাছা, বাঘারপাড়া ও অভয়নগর উপজেলায় টিসিবি পণ্যে বিক্রি করা হয়েছে। বাকি ৫ উপজেলায় তেলের সংকটের কারণে এখনও বিক্রি করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি। কয়েকদিনের মধ্যে তেল পাওয়া গেলে টিসিবি পণ্য বিক্রি শুরু হবে বলে তিনি জানান। তবে জেলার অন্যান্য উপজেলায় বিক্রির পর সদর উপজেলায় টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে টিসিবি পণ্য নিয়ে এ অনিশ্চয়তায় চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন ভুক্তভোগী কার্ডধারীরা। তাদের দাবি আকাশছোঁয়া এ দ্রব্যমূল্যের মাঝে কমমূল্যের এ পণ তাদের সংসার জীবনে সামান্য স্বস্তিদায়ক হলেও সেটি বন্ধ থাকায় হতাশ হয়েছেন তারা।
যশোর সদরের রূপদিয়া এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারের বর্তমান নিত্যপণ্যের যে দাম সে হিসাবে টিসিবির মালামাল ক্রয় করে কিছুটা সাশ্রয়ী হচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে ডিলারদের কাছে বারবার গিয়েও নিশ্চয়তা পাচ্ছেন না কবে নাগাদ মালামাল দেয়া হবে। তিনি বলেন, ডিলাররা তাদের বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট পণ্য সরবরাহ দিতে না পারার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।