নিজস্ব প্রতিবেদক:কভিডকালে জালিয়াতি-প্রতারণায় আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমের অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু হবে আগামী ১০ আগস্ট।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার ৭ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার রায় এ তারিখ ঠিক করে দেন বলে জানান এ আদালতের পেশকার আমিনুর রহমান সাগর। কোনো সাফাই সাক্ষী হাজির করবেন না জানিয়ে এদিন সাহেদ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য জমা দেন। এ সময় তার আইনজীবী আদালতে শুনানিতে অংশ নেন বলে পেশকার জানান।
এর আগে গত ১৭ জুলাই তদন্ত কর্মকর্তা, দুদকের পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারীর সাক্ষ্য দেয়ার মধ্য দিয়ে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য শেষ হয়। সেদিন বিচারক প্রদীপ কুমার রায় আসামির আত্মপক্ষ সমর্থন এবং যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য ২৫ জুলাই তারিখ রাখেন।
গতকাল আসামিকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য পড়ে শোনানো এবং তার বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। সাফাই সাক্ষ্যের সুযোগও ছিল। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ২০২০ সালের ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তি হয়। তিন মাস না যেতেই করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেয়া, সরকারের কাছে বিল দেয়ার পর রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে রিজেন্টের বিরুদ্ধে।
এরপর ওই বছর ৭ ও ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয় র্যাব। ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, অনিয়মের নানা অভিযোগ তখন সামনে আসতে থাকে।
তদন্ত চলার মধ্যেই ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর সম্পদের হিসাব চেয়ে সাহেদকে নোটিশ পাঠায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক); ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে বলা হয়।
বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে তিনি সম্পদ বিবরণী জমা না দেয়ায় অতিরিক্ত আরও ১৫ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়। সাহেদ এরপরও তা জমা না দেয়ায় ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ। ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আনা হয় সেখানে।
তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর ওই বছর ১৭ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে সাহেদের বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এ মামলার মোট দশজন বিভিন্ন সময়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে তিন ডজনের বেশি মামলা দায়ের হয়। ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া মামলায় আদালত সাহেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।