বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন ক্ষমতায় বসানোর জন্য, কোনো লাভ হবে না: ভূমিমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক : বিএনপিকে উদ্দেশ করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন ক্ষমতায় বসানোর জন্য, কোনো লাভ হবে না। নিয়ম অনুযায়ী দেশ চলবে। সংবিধান মেনে আগামী নির্বাচন করব আমরা। অসাংবিধানিক কোনো কথা বলে লাভ হবে না।’

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার হবে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘একটা ছোট ক্যাবিনেট হবে। ক্যাবিনেট রুটিন কাজ করবে। অন্য কোনো কাজ করবে না। জনগণ যাকে ভোট দেয়, তারাই ক্ষমতায় আসবে। আমার বিশ্বাস, আমরাই ক্ষমতায় আসব। কেন আসব? কারণ জনগণের জন্য কাজ করেছি। একজন লন্ডনে বসে প্রশাসনের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছে, র‌্যাবের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছে, মনে হচ্ছে ক্ষমতায় চলে আসছে। এত সোজা নয়। সারাদেশের নেতাকর্মী এনে পল্টনে জড়ো করে বক্তব্য দিলেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে যাবে না। আগে মাঠে যান, নির্বাচনমুখী হন। অন্য চিন্তা করে লাভ হবে না।’

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিজিএমইএর মাহবুব আলী মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সেন্টার ফর রিজিওনাল স্টাডিজ, বাংলাদেশ (সিসিআরএসবিডি) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘ডায়ানামিকস অব অনগোয়িং ক্রাইসিস ইন চট্টগ্রাম হিল ট্রাক্টস অ্যান্ড ওয়েস ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিসিআরএসবিডির সভাপতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার খুব দুঃখ লাগে। বিএনপির কিছু দায়িত্বশীল নেতা বলছেন, আওয়ামী লীগকে পালাতে হবে। বাংলাদেশে কী হয়েছে, দেশ কোথায় গেছে যে আওয়ামী লীগকে পালাতে হবে? কে পালাবে? পালানোর মতো কী পরিবেশ হয়েছে? তারা কথায় কথায় বলে পালানোর সময় পাবেন না। আমরা কি চোর, নাকি ডাকাত? তাদের নেতা পালিয়েছে লন্ডনে। তাদের নেতা জেলে। আমরা পালাব কেন? আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই তো দেশ স্বাধীন হয়েছে। এটা আমাদের দেশ। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির দেশ।’ 

তিনি বলেন, ‘তারা যে বড় বড় কথা বলছে, কে নেতৃত্বটা দেবেন? ভাঁওতাবাজির কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। কী উন্নয়ন দেখাতে পারবে তাদের শাসনামলে। আন্দোলন করছেন ঢাকা শহর অবরুদ্ধ করে। আওয়ামী লীগ কি এমন দল ধাক্কা দিলে পড়ে যাবে? এত সহজ নয়। আওয়ামী লীগের ৭৫ বছর বয়স। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। আপনারা কীভাবে বলছেন গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে। আপনারা কী করেছিলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন এখনও কেউ ভোলেনি। বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। বোকার স্বর্গে বাস করছেন। বিদেশিরা ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে? এটা বাংলাদেশ।’

ভূমিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের সনদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণজোয়ারের মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেন। আমাদের সাড়ে ১৪ বছরের শাসনামলে অবশ্যই সারাদেশে উন্নয়ন হয়েছে। আমি বলব, ঢাকার পরেই চট্টগ্রামে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের বিমানবন্দর হয়েছে, আখতারুজ্জামান বাবু ফ্লাইওভার হয়েছে, এমএ মান্নান ফ্লাইওভার হয়েছে। বাংলাদেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেল হয়েছে, যেটা আমরা কখনও ভাবতেও পারিনি। আমাদের শাসনামলে হয়ে যাবে টানেল, আমাদের জীবদ্দশায় দেখে যাব। আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। সামনে যত দিন যাবে চট্টগ্রাম আরও এগিয়ে যাবে।’ 

সিসিআরএসবিডির নির্বাহী পরিচালক চবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবির আইন বিভাগের ডিন ড. আবদুল্লাহ ফারুক। প্যানেল আলোচক ছিলেন বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত শোভারানী ত্রিপুরা, চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, খাগড়াছড়ি মং সার্কেলের চিফের পরিবারের সদস্য রাজকুমার টুইন ইনপ্রু মারমা, এফবিসিসিআইর পরিচালক ডা. মুনাল মাহবুব ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম।