টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থায় অবদান রাখবে আঞ্চলিক সংযোগ: নসরুল হামিদ:

নিজস্ব প্রতিবেদক:বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থা গড়তে আঞ্চলিক আন্তঃসীমান্ত সংযোগ কার্যকর অবদান রাখবে। একই সঙ্গে দক্ষতা বৃদ্ধি, বৈচিত্র্যময় জ্বালানি উৎসের সমতা ও ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করে শক্তিশালী সহযোগিতার নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে।

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে গতকাল শুক্রবার এসকাপ আয়োজিত তৃতীয় এশিয়া প্যাসিফিক এনার্জি ফোরামে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শক্তিশালী জ্বালানি সহযোগিতা ও আঞ্চলিক আন্তঃসংযোগ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের টেকসই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের পোর্টফোলিওতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অবদান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৫ সালের মধ্যে কমপক্ষে চার হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ উৎস থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হবে।

১২০টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১১ হাজার ৭০৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন করার প্রকল্প বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। সবুজ জ্বালানির ব্যাপক প্রসার করতে হলে প্রযুক্তির অবাধ বিচরণ এবং উপযুক্ত বিনিয়োগ প্রয়োজন। তাছাড়া সবুজ জ্বালানি ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে পারস্পরিক সহযোগিতা ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়াতেই হবে। নানা সীমাবদ্ধতার পরও বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং আগামীতেও দেবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নেপালের জ্বালানি, পানিসম্পদ এবং সেচ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী শক্তি বাহাদুর বাসনেট, এসকাপের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি ফর প্রোগ্রাম লিন ইয়াং, আসিয়ান সেন্টার ফর এনার্জির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর নোকি আগেয়া উতামা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অঞ্চল লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত এবং একটি কর অঞ্চল লক্ষ্যমাত্রার সমান সমান কর আদায় করেছে। আটটি কর অঞ্চলের মধ্যে চারটি ঢাকা এবং চারটি ঢাকার বাইরের কর অঞ্চল রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারা কর অঞ্চলগুলো হলোÑকর অঞ্চল-৯, কর অঞ্চল-১০, কর অঞ্চল-১২, কর অঞ্চল-১৩, কর অঞ্চল-১ চট্টগ্রাম, কর অঞ্চল সিলেট, কর অঞ্চল নারায়ণগঞ্জ ও কর অঞ্চল ময়মনসিংহ। এই আটটি কর অঞ্চলের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সবচেয়ে বেশি আয়কর আদায় করেছে কর অঞ্চল-১০, ঢাকা। এই কর অঞ্চলের সেপ্টেম্বর মাসের ৩৬৮ কোটি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫৫০ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮২ কোটি টাকা বেশি। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই কর অঞ্চলের লক্ষ্যমাত্রা ৭৫৩ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে এক হাজার ৮৫ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩৩২ কোটি টাকা বেশি। গত অর্থবছর একই সময়ে আদায় হয়েছিল ৭৬৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ঢাকার বাইরে কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রাম সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪ কোটি টাকা বেশি আদায় করেছে। এই কর অঞ্চল সেপ্টেম্বর মাসে ৯৩০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে পাঁচ কোটি টাকা বেশি আদায় করেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুই হাজার ১৫৪ কোটি টাকার বিপরীতে দুই হাজার ১৮০ কোটি ৮০ লাখ টাকা আদায় করেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ কোটি টাকা বেশি আদায় করেছে। এই কর অঞ্চল তিন কোটি ২০ লাখ টাকা প্রত্যর্পণ করেছে।

হিসাবে দেখা গেছে, কর অঞ্চল-৯, ঢাকা সেপ্টেম্বর মাসে ১২২ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এক কোটি টাকা বেশি আদায় করেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২১০ কোটি টাকার বিপরীতে ২২৩ কোটি টাকা আদায় করেছে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৩ কোটি টাকা বেশি আদায় করেছে। কর অঞ্চল সিলেট সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ কোটি টাকার বিপরীতে চার কোটি বেশি আদায় করেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার ১১৬ কোটি টাকার বিপরীতে ২০৭ কোটি ২০ লাখ টাকা আদায় করেছে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১ কোটি টাকা বেশি আদায় করেছে। কর অঞ্চল-১৩ ও কর অঞ্চল ময়মনসিংহ সেপ্টেম্বর পর‌্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পাঁচ কোটি টাকা করে বেশি আদায় করেছে। কর অঞ্চল-১৩ সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ১৪০ কোটি টাকার বিপরীতে অতিরিক্ত এক কোটি ২৭ লাখ টাকা আদায় করেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই কর অঞ্চল লক্ষ্যমাত্রা ৩৬৫ কোটি টাকার বিপরীতে অতিরিক্ত পাঁচ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আদায় করেছে। কর অঞ্চল ময়মনসিংহ সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ১০১ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭৫ কোটি টাকা। তবে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তিন মাসে এই কর অঞ্চল লক্ষ্যমাত্রা ২১১ কোটি টাকার বিপরীতে ২১৬ কোটি টাকা আদায় করেছে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পাঁচ কোটি টাকা বেশি আদায় করেছে। কর অঞ্চল-১২ সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ৬৯ কোটি টাকার বিপরীতে অতিরিক্ত ১২ লাখ টাকা আদায় করেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই কর অঞ্চল লক্ষ্যমাত্রা ১৭০ কোটি টাকার বিপরীতে ১৩ লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় করেছে। একমাত্র কর অঞ্চল নারায়ণগঞ্জ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ২১৯ কোটি টাকার বিপরীতে ২১৯ কোটি টাকা আদায় করেছে। সেপ্টেম্বর মাসে এই কর অঞ্চল লক্ষ্যমাত্রা ৭৭ কোটি টাকার বিপরীতে ৭৭ কোটি টাকা আদায় করেছে।

গবেষণা ও পরিসংখ্যান অনুবিভাগের হিসাব অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে ২৩টি কর অঞ্চল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। একইভাবে এসব কর অঞ্চল সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসেও একইভাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। কর অঞ্চলগুলো হলোÑকর অঞ্চল-১ ঢাকা, কর অঞ্চল-২ ঢাকা, কর অঞ্চল-৩ ঢাকা, কর অঞ্চল-৪ ঢাকা, কর অঞ্চল-৫ ঢাকা, কর অঞ্চল-৬, কর অঞ্চল-৭, কর অঞ্চল-৮, কর অঞ্চল-১১, কর অঞ্চল-১৪, কর অঞ্চল-১৫, কেন্দ্রীয় জরীপ অঞ্চল, কর অঞ্চল-২ চট্টগ্রাম, কর অঞ্চল-৩ চট্টগ্রাম, কর অঞ্চল-৪ চট্টগ্রাম, কর অঞ্চল খুলনা, কর অঞ্চল রাজশাহী, কর অঞ্চল রংপুর, কর অঞ্চল বরিশাল, কর অঞ্চল গাজীপুর, কর অঞ্চল কুমিল্লা ও কর অঞ্চল বগুড়া।

গবেষণা ও পরিসংখ্যান অনুবিভাগের হিসাব অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে আয়কর (ভ্রমণ করসহ) অনুবিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ১২ হাজার ৪৫ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ১১ হাজার ১৮৮ কোটি ৫৯ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৫৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে আয়কর লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২৬ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা, যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৩ হাজার ২৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় তিন হাজার ৯০০ কোটি ২০ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। যেখানে গত অর্থবছর একই বছর আদায় হয়েছিল ১৯ হাজার ৮১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে আদায় প্রবৃদ্ধি প্রায় সাড়ে ১৭ শতাংশ। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২০১.১৯ কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে। উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভ্রমণ কর আদায় হয়েছে ১৮০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।