প্রতিনিধি, রংপুর: গাছের কষ্টে ক্ষমা চেয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। গতকাল শনিবার দুপুরে হেয়াত মামুদ ভবনের সামনে বিভিন্ন সংগঠন এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক সংগঠন রণনের সভাপতি ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ। সঞ্চালনা করেন রিভারাইন পিপল ক্লাবের আহ্বায়ক ছাওমুন পাটোয়ারী সুপ্ত।
ক্যাম্পাসে হেয়াত মামুদ ভবনের সামনে ‘পালাম’ নামের একটি বিরল প্রজাতির গাছের চারা তিন বছর আগে রোপণ করা হয়। গত ১৭ নভেম্বর রাত ৮টায় গাছটির সব ডালপালা কেটে ফেলা হয়। এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দুটি প্রতিবাদী বোর্ড স্থাপন করেন।
একটিতে লেখা ‘প্রিয় পালাম গাছ, নির্মমভাবে তোমাকে সব ডালপালা কাটার হাত থেকে রক্ষা করতে পারিনি। আমাদের ক্ষমা করে দিয়ো। কথা দিচ্ছি, যারা গাছ কেটেছে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা আমরা করবই।’ অপর বোর্ডে লেখাÑ‘আমি পালাম গাছ, আমার সব ডালপালা নির্মমভাবে কেটে ফেলায় আমি খুব কষ্ট পাচ্ছি। সংবেদনশীল মানুষ আমার পাশে দাঁড়াও।’
অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদ মণ্ডল, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. নিত্য ঘোষ, শিক্ষক খাইরুল ইসলাম পলাশ, গ্রিন ইকোর সংগঠক নুরুন্নেসা, গ্রিন ভয়েসের বেরোবি শাখার সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী, বিতর্ক সংগঠন বিআরইউডিএফের সংগঠক প্রিতম দেবনাথ প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
অধ্যাপক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, বিরল প্রজাতির গাছ পালামের যারা ক্ষতি করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ জানাব, প্রয়োজনে আইনের আশ্রয় নেব।
আসাদ মণ্ডল বলেন, গাছের ক্ষতি যারা করেছে, তাদের প্রতি নিন্দা জানাই। ড. নিত্য ঘোষ বলেন, বিশ্ব উষ্ণতা বৃদ্ধির কালে বৃক্ষরোপণ অতি জরুরি। অপ্রয়োজনে গাছ কাটা অন্যায়। কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, দেশের কোথাও অপ্রয়োজনে গাছ কাটা উচিত নয়।
খাইরুল ইসলাম পলাশ বলেন, বেরাবিতে চার শতাধিক প্রজাতির ৩৭ হাজার গাছের মধ্যে এই গাছটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গভীরের। প্রতিদিন যখন ক্যাম্পাসে আসি এ গাছটি দেখি। গাছের যারা ক্ষতি করেছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
কর্মসূচি গ্রহণকারী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলোর মধ্যে রণন, রিভারাইন পিপল, গ্রিন ইকো, গ্রিন ভয়েস, বিআরইউডিএফ ও গুনগুনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।