নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘদিন ধরে প্রক্রিয়াধীন থাকা স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের কাজ শেষ পর্যায়ে এবং আগামী সপ্তাহেই তা মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে গতকাল শুক্রবার ড্রিমার্স কনসালটেশন অ্যান্ড রিসার্চ আয়োজিত ‘দুইশততম মেডিকেল ক্যাম্প উদ্?যাপন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের আগেই উচিত ছিল
দরিদ্র মানুষকে হেলথ কার্ড প্রদান করা, কিন্তু সেটা করা হয়নি। দেশের
স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েও এখনও শেষ হয়নি।
আমি এই পদে আসীন হওয়ার পরে আমাকে সময় দেয়া হলো মাত্র আট দিন। আমি বললাম, আমি এটা জানি না। আমাকে আগে জানতে
হবে, তারপর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আজকে দুই
মাস পেরিয়েছে, আমরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটা ক্যাবিনেটে দিতে পারব বলে আশাবাদী।
তিনি বলেন, সরকার একা সব কাজ করতে পারে না। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক সংগঠন ভালোভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয় করতে পারছি না। যে যেভাবে যোগ্য তাকে সেভাবেই অভিনন্দন জানানো উচিত। ভালো কাজের সম্মান দিলে এই জেনারেশন সেটা থেকে শিখবে। দেশের নানা প্রান্তে অনেক হিরো আছে, যাদের আমরা যথাযোগ্য সম্মান দিতে পারি না।
স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানো উচিত বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নানা সমস্যায় জর্জর ছিল এই মন্ত্রণালয়। আজকে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করতে পারলে আমাদের হাসপাতালে আসতে হতো না। আমরা সেটা প্রতিরোধ করতে পারিনি। স্বাস্থ্য খাত এখন এমন পর্যায়ে এসেছে যে এখন সংস্কার প্রায় অসম্ভব। এটাকে ভেঙে আবার ঢেলে সাজাতে হবে।
আন্দোলনের আহতদের চিকিৎসাসেবা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসা সহজ করতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। দেশের ডাক্তারদের পাশাপাশি আমরা ফ্রান্স ও চীন থেকে ডাক্তার এনেছি। তারপর নেপাল থেকে চক্ষু চিকিৎসক এনে চিকিৎসা করিয়েছি। তবুও অনেক রোগীর চোখ আমরা ভালো করতে পারিনি।
যারা পা হারিয়েছেন তাদের ব্যাপারে আমরা যুক্তরাজ্য, চীন ও ফ্রান্সের ডাক্তারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এমন একজনকে আমরা ব্যাংককে পাঠিয়েছি, যার চিকিৎসা ব্যয় প্রায় দুই কোটি টাকা। একজন সিএমএইচে আছেন, একজন বার্ন ইউনিটে আছেন, যাকে অস্ট্রেলিয়া পাঠাতে চার কোটি টাকা খরচ হবে। এরকম অনেককে আমরা বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে কথা বলে বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করছি।
সভাপতির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যা শুধু অ্যাকাডেমিক
দিকে নয়, বরং একটি সমাজ ও দেশ গঠন করেছে। যখন দেশের
মানুষ হতাশ হয়েছে বা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এসেছে। অসম্ভবকে সম্ভব করেছে, তারই উদাহরণ। এই জুলাই বিপ্লবকে সফল করতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি ডিরেক্টর মোরশেদ আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, আব্দুল কাদের, মাহিন সরকার, স্বাস্থ্য কমিটির আহ্বায়ক নাহিদা বুশরা, সদস্য সচিব তারেক রেজা প্রমুখ।