প্রতিনিধি, পঞ্চগড়: আশ্বিনের বিদায়ের পর থেকে কার্তিকের শুরুতেই শীতের পরশ ছুঁয়ে যাচ্ছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের প্রকৃতিতে। ভোরে ঘাসের ডগায় টলমল করছে শুভ্র শিশির। হাওয়ায় হিমেল পরশ বলে দিচ্ছে শুরু হয়ে গেছে শীত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যে কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
গতকাল শনিবার সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস। এর আগের দিন ১৮ অক্টোবর রেকর্ড করা হয় ২১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সকালে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, সবুজ ঘাসের ডগায় ও চা পাতায় শিশিরবিন্দু ঝরছে। ভোরের আলোয় চকচক করছে শিশিরবিন্দু। কিছুটা কুয়াশাজড়ানো প্রকৃতি। শিশির মাড়িয়ে কাজে যেতে দেখা গেছে চাষিদের।
স্থানীয়রা জানান, উত্তরের জেলাটি বরফের পাহাড় হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার কোলঘেঁষা হওয়ায় এখানে কিছুটা আগেই শীতের আগমন ঘটে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত শীতের দাপট বেশি হয়ে থাকে। তবে অক্টোবর থেকেই শুরু হয় শীতের আমেজ। এ বছরও অক্টোবরের থেকেই তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। এখন মাঝরাতের পর থেকেই শীত অনুভব হতে থাকে। ভোর পর্যন্ত গায়ে কাঁথা নিতে হচ্ছে। রাজ্জাক, করিম, জুলহাস ও নাসিরসহ তেঁতুলিয়ার কয়েকজন জানান, ঠাণ্ডা পড়তে শুরু করেছে। দিনে গরম থাকলেও রাত বাড়তে থাকলে দুদিন ধরে হালকা ঠাণ্ডা লাগে। রাতে এখন কাঁথা ও পাতলা কম্বল গায়ে নিতে হয়। কার্তিক শুরু হয়েছে, এখন যত দিন যাবে শীত বাড়তে থাকবে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, আশ্বিন মাসে মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় থাকায় এবং উত্তরীয় বায়ুর কিছুটা প্রভাব থাকায় শেষ রাতে শীত নেমে এলে ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। বিশেষ করে মৌসুমি বায়ু যখন বাংলাদেশের ওপর আর সক্রিয় থাকবে না। অক্টোবর থেকে উত্তরাঞ্চলে কুয়াশা পড়া শুরু হয়। এখন থেকেই উত্তরের জেলাগুলোয় তাপমাত্রা কমতে থাকবে। নভেম্বরের শুরু হয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পুরোপুরি শীতের প্রভাব পড়বে। শীতকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়ে যায় লেপ-তোশক কারিগরদের। শীতের প্রস্তুতি হিসেবে শীত আসার দু-এক মাসের আগে থেকেই কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় কারিগরদের। এছাড়া ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানে শীতের কাপড় আনতে শুরু করেছেন। শীতের আগেই শীতের কাপড় এবং লেপ-তোশক তৈরি করে আগাম প্রস্তুতি নিতে যায় অনেককে।
পঞ্চগড়ের প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেল শাহ জানান, তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। আজ (শনিবার) সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন রেকর্ড হয়েছিল ২১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন দিন যত যাবে তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে।