ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ১৯ হাজার প্রণোদনা পাচ্ছেন ২৭৭৫ জন

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর: নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা ও পাঁচ ইউনিয়নে এবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিন হাজার ৪৬ হেক্টর জমির ফসল। এতে ক্ষতির শিকার হয়েছেন প্রায় ১৯ হাজার কৃষক। অথচ সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে মাত্র দুই হাজার ৭৭৫ কৃষককে। এসব কৃষককে রবিশস্যের বীজ ও সার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হবে। ফলে এ প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ১৬ হাজার ১১১ কৃষক।

এদিকে মাঠপর্যায়ে কৃষি প্রণোদনার সহায়তা দিতে কৃষকের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বিপুলসংখ্যক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্য থেকে মাত্র দুই হাজার ৭৭৫ কৃষকের তালিকা তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছে তালিকা প্রণয়ন কমিটি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দফতর সূত্রে জানা যায়, গত আগস্টে অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলে উপজেলার পাঁচ ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়। ওই সময়ে সাত হাজার ৯৭৯ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছিল। অন্য ফসল আবাদ হয়েছিল ২৪৯ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে পানিতে তলিয়ে তিন হাজার ৪৬ হেক্টর রোপা আমন এবং ৬৮ হেক্টর জমির অন্য ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। এতে রোপা আমনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের সংখ্যা ১৮ হাজার ৬০০ এবং অন্য ফসলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের সংখ্যা ২৮৬ জন। বন্যায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের সংখ্যা ১৮ হাজার ৮৮৬ জন। কিন্তু বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মাত্র দুই হাজার ৭৭৫ কৃষক পরিবারের জন্য কৃষি প্রণোদনার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এসব পরিবারের মধ্যে প্রণোদনা হিসেবে গম, ভুট্টা, সরিষা, মুগ ডাল ও  বিটি বেগুন বীজ ও সার বিনা মূল্যে বিতরণ করা হবে।

এদিকে কৃষি দফতর সূত্রে আরও জানা যায়, কৃষি প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণের লক্ষ্যে পাঁচ ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারের তালিকা তৈরি কাজ শুরু হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও কৃষি দফতরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত কমিটি তালিকা তৈরির কাজ করছে। তালিকা তৈরি শেষ হলেই তালিকাভুক্ত কৃষক পরিবারকে প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হবে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, বরাদ্দ সামান্য পাওয়ায় অধিকাংশ কৃষক প্রণোদনার তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন। ফলে তালিকায় নামভুক্তি করা নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা পড়েছেন বিপাকে। তারা তালিকা তৈরি করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়রা মণ্ডল জানান, প্রণোদনার জন্য যে পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তুলনায় সামান্য। বরাদ্দ সীমিত হওয়ায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তবে ভবিষ্যতে বরাদ্দ পাওয়া গেলে বাদ পড়া কৃষকরাও সহায়তা পাবেন।