রুশ গ্যাস সরবরাহ নিয়ে ভোগান্তিতে মলদোভা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ চুক্তি নবায়ন না হওয়ায় ইতোমধ্যে গ্যাস পাচ্ছে না এই অঞ্চলের মানুষ। ইউরোপের দেশ মলদোভাও একই ভোগান্তিতে পড়েছে। বিশেষ করে মলদোভা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া অঞ্চল ট্রান্সডনিয়েস্ট্রিয়ায় বিদ্যুৎ সংকট চলছে। খবর: রয়টার্স।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে ট্রান্সডনিয়েস্ট্রিয়ার সরকার জানিয়েছে, বিভিন্ন জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। নতুন বছরের প্রথমদিন ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যুদ্ধ চলমান থাকার কারণে মস্কোর সঙ্গে সরবরাহ চুক্তি নবায়নে কিয়েভ অস্বীকৃতি জানালে এই সংকট শুরু হয়।

ট্রান্সডনিয়েস্ট্রিয়ার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট ভাদিম ক্রাসনোসেলস্কি এর আগে বলেছিলেন, বিদ্যুৎ সংকট এড়ানোর কোনো উপায় ছিল না। উত্তরাঞ্চলের জন্য ১০ দিন এবং দক্ষিণের জন্য ২০ দিনের পর্যাপ্ত গ্যাস মজুত রয়েছে। তবে এরপর কীভাবে সরবরাহ চালু থাকবে সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি বলেছেন, বিদ্যুৎ সংযোগ চারঘণ্টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন রাখার প্রয়োজন হতে পারে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম ধাপের বিদ্যুৎ সংকট দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন ট্রান্সডনিয়েস্ট্রিয়ার কর্মকর্তারা।

রুশভাষী এই অঞ্চলটি মলডোভা-ইউক্রেন সীমান্ত বরাবর অবস্থিত, যা ১৯৯০-এর দশকে মলদোভা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ইউক্রেনের মাধ্যমে সরবরাহ করা রাশিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আসছে তারা।
এদিকে গ্যাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে রাশিয়া দাবি করেছে, তারা মলদোভার ওপর গ্যাসকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে না। বরং চুক্তি নবায়নে অস্বীকৃতি জানিয়ে দায়ী ইউক্রেন। মলদোভা তাদের ৬০ শতাংশ গ্যাসের চাহিদা রোমানিয়া থেকে পূরণ করে। বাকিটা নিজেরাই উৎপাদন করে। তবে ট্রান্সডনিয়েস্ট্রিয়ার বিদ্যুৎ বিভ্রাট মলদোভার জন্য বড় সমস্যা, কারণ অঞ্চলটির একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র সরকার-নিয়ন্ত্রিত মলদোভায় সস্তা দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।

মলদোভার প্রধানমন্ত্রী ডোরিন রেসিয়ান বলেন, ট্রান্সডনিয়েস্ট্রিয়ার বিদ্যুৎ বিভ্রাট তাদের জন্যও একটি সংকট তৈরি করেছে। তবে সরকার বিকল্প ব্যবস্থা নিয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি ও রোমানিয়া থেকে বিদ্যুৎ আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। মলদোভার অভিযোগ, রুশ গ্যাস প্রতিষ্ঠান গাজপ্রম ইউক্রেনকে এড়িয়ে সরাসরি গ্যাস সরবরাহ করতে পারলেও ইচ্ছাকৃতভাবে তা করছে না। এমনকি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আগেও ২৮ ডিসেম্বর গাজপ্রম জানায়, মলদোভার ৭০৯ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া থাকার কারণে ১ জানুয়ারি থেকে গ্যাস রফতানি স্থগিত করা হবে।