যুক্তরাজ্যে শিশুদের গায়ে হাত তোলা যাবে না

# পার্লামেন্টে বিল উত্থাপন

শেয়ার বিজ ডেস্ক: শিশুদের মারধরের ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছেন ইংল্যান্ডের শিশু চিকিৎসকরা। এ বিষয়ে আইন সংশোধনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। খবর: বিবিসি।

যুক্তরাজ্যে বর্তমানে যুক্তিসংগত কারণে শিশুদের মারধর করা আইনগতভাবে বৈধ। কিন্তু চিকিৎসকরা তাও চান না। তবে রয়্যাল কলেজ অব পেডিয়াট্রিক্স অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ (আরসিপিসিএইচ) বলছে, কারণ যত যুক্তিসংগত হোক, শিশুর বিকাশে মারধরের কোনো ইতিবাচক প্রভাব কোনো গবেষণায় লক্ষ্য করা যায়নি, বরং রয়েছে অনেক নেতিবাচক প্রভাব। তাই এ আইন সংশোধনের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। তারই জেরে বর্তমান আইন সংশোধনে এ সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপিত হয়েছে। গত জানুয়ারিতে ‘চিলড্রেনস ওয়েলবিইং অ্যান্ড স্কুলস বিল’—নামের ওই সংশোধনীটি উত্থাপন করেন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সংসদ সদস্য (এমপি) জেস আসাতো।

নির্ধারিত সংখ্যক এমপি বিলটিতে সমর্থন দিলেই ইংল্যান্ডে পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে শিশুদের গায়ে হাত তোলা। এমনকি শিশুকে শারীরিকভাবে আঘাত করার এখতিয়ার থাকবে না বাবা-মায়েরও। এ বিল নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে অভিভাবকদের মধ্যে। কেউ কেউ শিশুদের গায়ে হাত তোলা বন্ধের এ বিলে সমর্থন দিলেও অনেকে অপছন্দও করছেন। অনেকে মনে করেন, নিজের সন্তানকে শাসনের সম্পূর্ণ অধিকার বাবা-মায়ের রয়েছে। সেখানে সরকারের হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। মাঝে মধ্যে শিশুরা এমন কোনো অন্যায় করে ফেলতে পারে, যার জন্য শারীরিক আঘাতকেই উপযুক্ত শাস্তি বলে মনে করেন তারা।

আরসিপিসিএইচ—এর কর্মকর্তা প্রফেসর অ্যান্ড্রু রোল্যান্ড বলেন, ভিক্টোরিয়া যুগের এসব শাস্তির ধরন বন্ধ করার সময় এসে গেছে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, শাসন হিসেবে মারধর কোনো ইতিবাচক প্রভাব রাখে না শিশুর বিকাশে, বরং এটি শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞদের মতে, শাস্তি হিসেবে যখন শিশুকে শারীরিক আঘাত করা হয় তখন সে আরও বেশি বিরোধী আচরণ করে, তার আচরণে দেখা দেয় বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও আগ্রাসনের মতো বিষয়গুলো।

ইংল্যান্ডে গত বছর বাবা ও সৎ মায়ের মারধরের শিকার হয়ে মারা যায় সারাহ নামের ১০ বছর বয়সী শিশু। তারপর থেকে শিশুদের গায়ে হাত তোলা বন্ধে তোড়জোড় শুরু করেছে শিশু সুরক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠন।

উল্লেখ্য, বিশ্বের ৬৭টি দেশ শিশুদের মারধর করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এ সংস্কৃতি বন্ধের পরিকল্পনা করছে আরও ২০টি দেশ।-