নিজস্ব প্রতিবেদক : আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে মো. সাফায়েত আলম জালিয়াতি করেছেন। তিনি অবশ্যই দোষী ও তার এই পদ পাওয়ার কোনো অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভা শেষে ড. আহসান এইচ মনসুর গতকাল রোববার এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সাফায়েত আলম জালিয়াতির মাধ্যমে নগদের সিইও পদে নিজেকে বহাল রেখেছেন। তার এই পদ পাওয়ার কোনো অধিকার নেই। তিনি দায়িত্ব নিতে পারেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংক যার নামে মামলা করেছে, তাকেই পুনরায় নগদের সিইও করা হয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, ‘সরকার তো সেটা মানবে না। এটা তো সরকারের পজিশন নয়। সরকারের পজিশন বাংলাদেশ ব্যাংক যেটা বলেছে; সেটাই। তবে যেহেতু বিষয়টি এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলা ঠিক নয়।’
তাহলে কি ডাক বিভাগের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরোধ সৃষ্টি হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কোনো বিরোধ হবে না। ডাক বিভাগ কেন বিরোধ করবে? এখন আর কোনো বিরোধ পাবেন না।’
‘তার (সাফায়েত আলম) কোনো অধিকার নেই সিইও পদে থাকার। আমাদের অবস্থান হলো তিনি দায়িত্ব নিতে পারেন না। অবশ্যই তিনি জালিয়াতি করেছেন। অবশ্যই তিনি দোষী’-বলেন গভর্নর।
এর আগে শনিবার আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেছেন, ‘নগদের আগের বোর্ডে যারা ছিলেন তারা বিপুল আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে কোটি কোটি জনগণের স্বার্থ সম্পৃক্ততা আছে এবং শত শত কোটি টাকার আমানত এখানে জড়িত, তাই বাংলাদেশ ব্যাংক সাময়িকভাবে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব নেয়। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবীর অনুপস্থিতিতে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্তে আট সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। এর ওপর ভিত্তি করে বেআইনিভাবে এমন একজনকে প্রতিষ্ঠানটির সিইও হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে যিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামি।’
তিনি আরও বলেন, ‘নগদের আইটি বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুষ্কৃতকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে এ মুহূর্তে কী হচ্ছে তা নিয়ে শঙ্কিত বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্থ তছরুপ ও বেআইনি কর্মকাণ্ড হওয়ার আশঙ্কা করছে।’
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চে প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামিদের পুলিশ কেন খুঁজে পাচ্ছে না সে প্রশ্নও রাখেন মুখপাত্র।
গতকালের সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।