বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ১০৫ কোটি টাকা : ডিএসই

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত ছিল। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে সূচকের বড় পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেনের সঙ্গে সঙ্গে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ১০৫ কোটি টাকা।

ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৮৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৯৮৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে দুই হাজার ১০৫ কোটি টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে ১ হাজার ৫৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৭২১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন কমেছে ১৪০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১৪৭ দশমিক ২০ পয়েন্ট কমেছে। সপ্তাহ শেষে সূচকটি অবস্থান করছে ৪ হাজার ৬৩৭ পয়েন্টে। প্রধান সূচকের সঙ্গে ‘ডিএসই-৩০’ সূচক এক সপ্তাহে ৪৭ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট কমেছে। আর ‘ডিএসইএস’ বা শরিয়াহ সূচক কমেছে ৩৫ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে ৩৯৫টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টির শেয়ারের দরই অপরিবর্তিত ছিল। অপরদিকে দর বৃদ্ধি পেয়েছে ৬৮টির, বিপরীতে কমেছে ৩০৩ কোম্পানির শেয়ার দর।

গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ছয় কার্যদিবসের মধ্যে পাঁচ কার্যদিবসেই দেশের প্রধান পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। ফলে সপ্তাহজুড়ে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে; যার জেরে মূল্যসূচকের বড় পতন দেখা গেছে। একই সঙ্গে লেনদেন নেমেছে তলানিতে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, সামষ্টিক অর্থনীতির চাপ, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং সুদের হারের ঊর্ধ্বগতি পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এর পাশাপাশি, বিনিয়োগকারীদের আস্থার অভাবও লেনদেন তলানিতে নামার অন্যতম কারণ। তবে একটি আশার দিক হলো, যে হারে দরপতন হয়েছে, সে হারে বাজার মূলধন কমেনি। এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, কিছু বড় মূলধনী কোম্পানির শেয়ারের দর তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকায় সামগ্রিক বাজার মূলধনে তার প্রভাব কম পড়েছে। আগামী সপ্তাহগুলোয় বাজার পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেদিকেই এখন সবার দৃষ্টি। বিনিয়োগকারী এবং পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হলে পুঁজিবাজারের এই অস্থিরতা কমতে পারে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।