শোবিজ ডেস্ক: একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রয়াত বাউল আবদুর রহমান বয়াতি বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানির কাছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা পাওনা আছে! বিনা অনুমতিতে এ বাউলের অসংখ্য গান দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিক ব্যবহারের কারণেই এই টাকার অঙ্ক উঠে এসেছে। এমনটাই জানালেন বাউল পরিবারের সদস্যরা।
গতকাল রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ পাওনা টাকা দ্রুত নিষ্পত্তির
আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আবদুর রহমান বয়াতির মেজো ছেলে মো. আলম বয়াতি বলেন, ‘আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে সব মোবাইল ফোন কোম্পানি, এফএম রেডিও ও সিডি-ভিসিডি বাজারজাতকরণ কোম্পানির প্রতি আবেদন জানাচ্ছিÑআবদুর রহমান বয়াতির গান যাতে করে আর পাইরেসি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানির কাছ থেকে পাওনা ১৬ কোটি টাকা দ্রুত প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।’ অতি সম্প্রতি কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন এ ব্যাপারে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বলেও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, ২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন জানান, শুধু মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো থেকে আবদুর রহমান বয়াতি ১৬ কোটি টাকা পাওনা আছেন। কণ্ঠশিল্পী সুজিত মোস্তফাও এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আলম বয়াতি আরও জানান, এখন থেকে আবদুর রহমান বয়াতি বাউল ফাউন্ডেশন কিংবা পরিবারের সম্মতি ছাড়া তার গান ডাউনলোড, আপলোড কিংবা রিমিক্স করা যাবে না। শুধু তাই নয়, এফএম রেডিও ও টিভি চ্যানেলে প্রচার করতে কিংবা সিডি-ভিসিডি করে বাজারজাত করতে ফাউন্ডেশনের অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে আবদুর রহমান বয়াতির বড় ছেলে মো. মহিউদ্দিন, ছোট ছেলে মো. আজিম হোসেন ও ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আশরাফ আখন্দ উপস্থিত ছিলেন। আবদুর রহমান বয়াতি ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত লোকসংগীত শিল্পী। তিনি একাধারে অনেক জনপ্রিয় লোকগানের শিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। ১৯৩৯ সালে ঢাকার সূত্রাপুর থানার দয়াগঞ্জে জš§গ্রহণ করেন এই বাউল কিংবদন্তি। জীবদ্দশায় তার প্রায় পাঁচশ একক গানের অ্যালবাম বের হয়েছে। পাশাপাশি অনেক মিশ্র অ্যালবামে তার গান রয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছেÑ‘মন আমার দেহঘড়ি’, ‘আমি ভুলি ভুলি’, ‘আমার মাটির ঘরে ইঁদুর ঢুকেছে’, ‘মরণেরই কথা কেন স্মরণ কর না’, ‘মা আমেনার কোলে ফুটল ফুল’, ‘ছেড়ে দে নৌকা মাঝি যাব নদীয়া’ প্রভৃতি । ১৯ আগস্ট ২০১৩ সালে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।