শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও : চলছে বর্ষাকাল। শ্রাবণের তিন দিন পেরিয়েছে। আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাস আমনের চারা রোপণের ভরা মৌসুম। কিন্তু ঠাকুরগাঁওয়ে আষাঢ় ও শ্রাবণেও বৃষ্টিহীনতায় তীব্র খরা দেখা দিয়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে কৃষকের আশা ভরসার আমন রোপণ। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতে আমন আবাদের প্রস্তুতি নেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। প্রতি বছর আষাঢ়ের শেষে শ্রাবণের শুরুতে ভারী বৃষ্টি থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হলেও এখন দেখা দিয়েছে তীব্র খরা। এতে নদীর পানিও শুকিয়ে গেছে। এতে পাট কেটে জাগ দেয়ার পানিটুকুও পাচ্ছে না কৃষক। এতে ভীষণ দুশ্চিন্তায় পডেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা। অনেক সচেতন কৃষক ভালো ফলনের আশায় গভীর নলকূপ, সেচ পাম্প বা শ্যালোমেশিনের সাহায্যে আমন রোপণ শুরু করেছেন।
এমনিতেই চলতি বছর বিরূপ আবহাওয়ায় বোরোর ভালো দাম না পাওয়ায় তেমন লাভের মুখ দেখেনি এই এলাকার কৃষকরা। সেই লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়েই চলতি মৌসুমে আবারও আমন চাষের প্রস্তুতি নিয়েছেন কৃষক। কিন্তু প্রয়োজনীয় বৃষ্টির অভাবে বিচলিত হয়ে পড়েছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি।
সদর উপজেলা আখানগর গ্রামের কৃষক বদিরুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ১৫ বিঘা জমিতে আমন চাষ করবেন। এ জন্য গত এক মাস আগে বাড়ির পাশে ২৫ শতক জমিতে সুমন স্বর্ণা ও বীনা-৭ জাতের আগাম বীজ বপন করেছেন। শ্রাবণের তিনদিন পেরিয়ে গেলও ভারী বৃষ্টির দেখা নেই। তাই পাঁচ বিঘা জমিতে গভীর নলকূপের সাহায্যে রোপণ করছি।এতে আমার খরচ বেশি হচ্ছে। বাকি জমিতে আমন রোপণের জন্য বৃষ্টিপাতের জন্য তাকিয়ে আছি।
পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষক আজহার আলী জানান, বীজতলার বীজের বয়স হয়ে গেছে, কয়েক দিনের মধ্যে চারা রোপণ না হলে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে। সে বীজ ক্ষেতে রোপণ করলে ধানের ফল একেবারে হবে না। সে ক্ষেত্রে আবারও লোকসান গুনতে হতে পারে। আমরা কৃষক আমাদের কৃষি ছাড়া আয় রোজগারের পথ নেই। তাই অনেক চিন্তায় আছি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাজেদুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে হালকা বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকরা এখন আমন রোপণ করতে পারেনি। তবে অনেক কৃষক গভীর নলকূপ, সেচপাম্প ও শ্যালোমেশিনের সাহায্যে চারা রোপণ শুরু করেছেন। তবে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টি হলে রোপা আমণের কোনো সমস্যা হবে না।

Discussion about this post