সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
১৬ ভাদ্র ১৪৩২ | ৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭
  • ♦ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শেয়ার বিজ
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ
➔ ই-পেপার
No Result
View All Result
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ
No Result
View All Result
শেয়ার বিজ
No Result
View All Result

রাজনৈতিক দলগুলোকে দ্রুতই ঐকমত্যে আসতে হবে

Share Biz News Share Biz News
সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫.১:২৯ পূর্বাহ্ণ
বিভাগ - পত্রিকা, সম্পাদকীয় ➔ প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন
A A
রাজনৈতিক দলগুলোকে দ্রুতই ঐকমত্যে আসতে হবে
1
VIEWS
Share on FacebookShare on TwitterShare on Linkedin

রেজাউল করিম খোকন : আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের রমজানের আগে সম্পন্ন করতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী ভোটের তারিখের দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। নির্বাচন কমিশন আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ বা পথনকশা ঘোষণা করেছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী সংসদ নির্বাচন হবে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে এবং তফসিল ঘোষণা হবে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের এটি আরেক ধাপ অগ্রগতি। অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছিল। আমরা ইসির এ ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নির্বাচনের পথে যাত্রা শুরু করল। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নির্বাচন কমিশনকে তফসিলের আগেও অনেকগুলো কাজ করতে হয়। রোডম্যাপে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চূড়ান্ত করাসহ ২৪টি কার্যকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতীয় নির্বাচনের যে কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে, সেটাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ ঘোষণাকে ‘অপরিপক্ব’, ‘আংশিক’ ও ‘কিছুটা বিভ্রান্তিমূলক’ বলে মনে করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জুলাই সনদ চূড়ান্ত হওয়ার আগে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা সরকারের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের শামিল বলে উল্লেখ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না করে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ ভবিষ্যতে সংকট তৈরি করতে পারে এবং এর দায় সরকারকেই নিতে হবে। নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রকাশের আগেই সরকার সংস্কারবিষয়ক পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জনের রোডম্যাপ প্রকাশ করবে, এমনটাই আশা করেছিল দলটি। জুলাই সনদ চূড়ান্ত না করে এবং তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া কী হবে, সে সিদ্ধান্তে না পৌঁছে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের শামিল। তারা বলেছেন, কোনোভাবেই নির্বাচনবিরোধী নন তারা। সেদিক থেকে রোডম্যাপ ঘোষণা ইতিবাচক। তবে যত দ্রুত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি হবে, তত দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়া যাবে বলে মনে করেন তারা। সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত না করে নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ ভবিষ্যতে সংকট তৈরি করতে পারে, যার দায় সরকারকেই নিতে হবে। যারা নির্বাচনবিরোধী কথা বলবেন, তারা রাজনীতির মাঠ থেকে বাদ পড়ে যাবেন, কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য । তিনি বলেছেন, মাঠের আলোচনা মাঠেই জবাব দেয়া হবে। নির্বাচনবিরোধী কথা যে-ই বলুন, তারা রাজনীতির মাঠ থেকে মাইনাস হয়ে যাবেন। কোনো দল নির্বাচনে অংশ না নিলে তা তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতার অংশ। তবে যারা অযৌক্তিকভাবে বর্জনের সুযোগ খুঁজবে, তারা ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নিজেরাই পিছিয়ে যাবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন সম্পর্কে কোনো শঙ্কা নেই। যদিও কিছু দল বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তবে এটি শুধুই তাদের রাজনৈতিক কৌশল। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রেখে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, এই নির্বাচন রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ঘটনা হবে। দেশে এরই মধ্যে নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। যে-ই এর বিপক্ষে কথা বলবে, তারা নিজেদের রাজনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভিন্নতার কারণে আটকে আছে জুলাই জাতীয় সনদ। এই দুটি বিষয় নিয়ে আগামী সপ্তাহে দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করার পরিকল্পনা আছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের। এটি হবে দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের তৃতীয় পর্বের আলোচনা। এর মধ্য দিয়ে সনদ চূড়ান্ত রূপ পেতে পারে। তবে এটি চূড়ান্ত হতে আরও সময় লাগবে।অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ছয়টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। ১৬ জুলাই এই সনদ সই করার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শেষ না হওয়ায় সে লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এখন আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সনদ চূড়ান্ত করতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কোন কোন ক্ষেত্রে সংস্কার আনা হবে, তাতে ঐকমত্য হলেও সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়ন ও জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেয়ার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা আছে। বিএনপির অবস্থান হলো, আইনবিধি-সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে পারে। আর সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে আগামী জাতীয় সংসদে। জামায়াতে ইসলামী চায়, গণভোট বা রাষ্ট্রপতির প্রোক্লেমেশনের (ঘোষণা) মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন করা হোক। আর গণপরিষদ গঠন করে সংস্কার প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তারা গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই সঙ্গে করার পক্ষে। এর পাশাপাশি যে ৮৪টি প্রস্তাব নিয়ে জুলাই সনদ তৈরি হচ্ছে, তার কয়েকটিতে বিএনপিসহ কিছু কিছু দলের ভিন্নমত আছে। যেমন প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান, উচ্চকক্ষে নির্বাচন পদ্ধতি ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পদ্ধতির মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে বিএনপির নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) আছে। এগুলোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি কী হবে, সে প্রশ্নও এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদের যে সমন্বিত খসড়া তৈরি করেছে, তার অঙ্গীকারনামা অংশ নিয়েও দলগুলোর মতভিন্নতা আছে। বিশেষ করে বিএনপি জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর স্থান দেয়া, জুলাই সনদ নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে নাÑএমন বিধান রাখার প্রস্তাবকে অযৌক্তিক বলে মনে করে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী মনে করে এমন বিধান রাখা প্রয়োজন। দলগুলো এরই মধ্যে তাদের লিখিত মতামত কমিশনকে জমা দিয়েছে। সনদের সমন্বিত খসড়া নিয়ে দলগুলোর মতামত কমিশন পর্যালোচনা করছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদের কারণে বহুল আলোচিত জুলাই সনদ জুলাই মাসে চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। এখনও রাজনৈতিক দলগুলো সনদের বিষয়ে একমত হতে পারছে না, এটা অবশ্যই উদ্বেগের কারণ। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদের সর্বশেষ যে খসড়া রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়েছে, তা নিয়ে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে। মূল সমস্যা এখানে নয়। সনদের বাস্তবায়নপ্রক্রিয়া তথা আইনি ভিত্তি নিয়েই বড় ধরনের বিরোধ দেখা দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রাথমিক খসড়ায় বলা হয়েছে, পরবর্তী জাতীয় সংসদ দুই বছরের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কিছু দল এ ব্যাপারে আপত্তি জানায়। তাদের মতে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকলে পরবর্তীকালে এটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে। এ ক্ষেত্রে তারা নব্বইয়ে ঘোষিত তিন জোটের রূপরেখার উদাহরণ দিয়েছে। বিএনপি ও তার সহযোগী দলগুলো মনে করে, জুলাই সনদের কিছু বিষয় অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যায়। আর যেসব বিষয়ের সঙ্গে সাংবিধানিক প্রশ্ন জড়িত, সে বিষয়গুলো পরবর্তী জাতীয় সংসদে অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে। কিন্তু এনসিপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কিছু দল জুলাই সনদ পুরোটাই নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নের পক্ষে। এ ক্ষেত্রে এনসিপি গণপরিষদের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এবং জামায়াত গণভোট বা রাষ্ট্রপতির প্রোক্লেমেশনের মাধ্যমে বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছে। জুলাই সনদের খসড়ায় বলা হয়েছিল, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলেও জুলাই সনদই অগ্রাধিকার পাবে। বিএনপি ও এর সহযোগীরা কোনোভাবে এটি মানতে নারাজ। বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে বলেছে, সংবিধান হলো দেশের সর্বোচ্চ আইন। জুলাই সনদকে এর ওপরে স্থান দেয়া হবে অবৈধ ও অগ্রহণযোগ্য। ঐকমত্যের দলিলে সংবিধান-বহির্ভূত কিছু বিষয় সন্নিবেশিত হতে পারে না। জামায়াতে ইসলামী অবশ্য ভিন্নমত পোষণ করে বলেছে, যেহেতু জুলাই সনদে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে, সেহেতু একে সংবিধানের ওপরে স্থান দিতে হবে। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি নতুন সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে গণপরিষদ বা সংবিধান সভা নির্বাচনের দাবি সামনে নিয়ে এসেছে। তারা বলেছে, জুলাই সনদের পরিপন্থি কোনো কিছু সংবিধানে থাকতে পারবে না। বহুদলীয় গণতন্ত্রে মত ও পথের ফারাক থাকবে। সেটি মেনে নিয়েই রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। এর মধ্যে রাজনৈতিক বাস্তবতাও স্বীকার করতে হবে। সংবিধান সংশোধন বা নতুন সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংবিধানকে অস্বীকার করা যাচ্ছে না।

সমঝোতায় পৌঁছাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে, যা সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখ শেষ হওয়ার কথা। হাতে যেহেতু বেশি সময় নেই, তাই আলোচনা দ্রুত শেষ করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে সরকার বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যেমন দায়িত্ব আছে, তেমনি দায়িত্ব আছে রাজনৈতিক দলগুলোরও। ভবিষ্যতে রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হবে, সে বিষয়ে তাদের ঐকমত্যে আসতেই হবে। এ অবস্থায় কোনো দলের এমন কিছু করা ঠিক হবে না, যাতে নির্বাচনপ্রক্রিয়া শুরু করতে বিলম্ব হয়। দেশবাসী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এ অপেক্ষা দীর্ঘায়িত করার কোনো সুযোগ নেই। রাজনৈতিক দলগুলো যদি শুধু নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) দিয়ে দায়িত্ব শেষ করে এবং সংস্কার বাস্তবায়ন না করে, তাহলে এর মাশুল তাদের দিতে হবে। এর সঙ্গে হয়তো নাগরিকদেরও মাশুল দিতে হবে। সেই মাশুল যেন নাগরিকদের দিতে না হয়। জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়নের সার্থকতা এর বাস্তবায়নের ওপর নির্ভর করে। সনদটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার, রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আছে। নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে এবং পরবর্তী সংসদে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা হবে, এমন মনোভাব পোষণ করলে রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। রাজনৈতিক দলগুলোকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে। পাশাপাশি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ যেন বৃথা না যায়, সে বিষয়ে দলগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনেরও বিশেষ ভূমিকা আছে। যেসব প্রস্তাব কমিশন দিয়েছে, সেগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়নের উদ্যোগ তাদের নিতে হবে। যদি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে না পারে, কেন এগুলো করছে না কিংবা কেন করা হবে না, সে বিষয়টি জানাতে হবে। কোনো একটা বিষয়কে মৌলিক অধিকারের মধ্যে নেয়ার ক্ষেত্রে সম্পদের বরাদ্দের বিষয়টি যুক্ত। তাই মৌলিক অধিকারের মধ্যে যুক্ত হওয়া নতুন বিষয়গুলো কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা স্পষ্ট নয়। সংকটটা কেবল জুলাই সনদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এখানে দৃশ্যমান, অদৃশ্য আরও অনেক কিছু আছে। এগুলোর সমাধান হতে পারে কেবল রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে। গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোয় যে পরিমাণ নোট অব ডিসেন্ট আছে, তাতে কোনো একটা রাজনৈতিক দল যে ক্ষমতায় আসবে, তার আসলে এটাতে রাজনৈতিক কোনো সমস্যা হওয়ার কারণ নেই। ভবিষ্যতে যে দলই ক্ষমতায় আসবে, তার স্বৈরাচারী ও আধিপত্যবাদী হওয়ার সুযোগ খুব একটা কমাবে না এই সনদ। তত্ত্বগতভাবে নাগরিকেরা দেশের মালিক হলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ হয় না। যেমনটা দেখা গেছে, সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায়। একটা কথা আছে, ‘আর্ট অব দ্য পসিবল, যতদূর সম্ভব’, এমন একটা মনোভাব নিয়ে বর্তমানে সংস্কার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ঐকমত্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে যে পরিমাণ নোট অব ডিসেন্ট এসেছে, তা বেশ হতাশাজনক। এতগুলো সংস্কার একসঙ্গে গণভোটে দেয়া একটি জটিল বিষয়। গণ-অভ্যুত্থানে অনেকেরই ভাই-বোন, বাবা-মা ও সন্তান মারা গেছেন। সেই সব হত্যাকাণ্ডের হুকুমদাতার বিচারকাজ চললেও তারা এখনো জানেন না কোন পুলিশের গুলিতে সে মারা গেছে। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও পঙ্গু হয়ে যাওয়া মানুষগুলোও বিষয়টি জানে না। জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার যেন চলমান থাকে। পরবর্তী সরকারের সময় বিচার যেন থেমে না যায়।

জুলাই জাতীয় সনদ থেকে কয়েকটি প্রাপ্তি হলোÑমৌলিক অধিকারগুলোর সম্প্রসারণ, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রক্রিয়া, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় লাগাম টানা, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, সংবিধানের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা ও সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন, জাতীয় সংসদে দলের বিরুদ্ধে ভোটদান, সংসদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ও বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ প্রভৃতি। জুলাই সনদের অপ্রাপ্তির বিষয়গুলো হলো জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের মাধ্যমে সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব, বৃহত্তর নির্বাচকমণ্ডলীর গোপন ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, স্থানীয় সরকারে ঘূর্ণমানপদ্ধতিতে নারীর আসন সংরক্ষণ প্রভৃতি। জাতীয় সংসদে নারীদের ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি, যা হতাশাজনক। ঘূর্ণ্যমান পদ্ধতিতে ১০০ আসনে নারীদের সরাসরি নির্বাচনের ব্যাপারে জনমত থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলো উদারতার পরিচয় দেয়নি; বরং বিদ্যমান আলংকারিক ৫০টি সংরক্ষিত আসনের বিধান বহাল আছে এবং নারীদের সরাসরি জিতে আসার সুযোগ বাড়েনি। এ ক্ষেত্রে নারীর যথার্থ প্রতিনিধিত্বের ন্যায্য অধিকার পরাজিত হয়েছে এবং পুরুষতন্ত্রের জয় হয়েছে। আরেকটি হতাশার বিষয় হলো অনেকগুলো মৌলিক বিষয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দল বারবার নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে। প্রত্যাশা করা যায়, নোট অব ডিসেন্ট দেয়া দলগুলো অধিকাংশ দলের সম্মতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে এগুলো মেনে নেবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের মধ্য দিয়ে প্রণীত জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। কিন্তু এর সার্থকতা নির্ভর করবে বাস্তবায়নের ওপর, যা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতভেদ আছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করা যায়, এ বিষয়ে দ্রুত একটি সমাধানে পৌঁছাবে ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো। আমরা মনে করি, সংস্কারের কোনগুলো সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে, কোনগুলো অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে, কোনগুলো প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে বাস্তবায়ন করা হবে এবং এর মধ্যে কোনগুলো আশু বাস্তবায়নযোগ্য, তা আলাদা করা দরকার। অতীতের তিনটি নির্বাচনে জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটেনি। এগুলোর কোনোটি বিনা ভোটের নির্বাচন ছিল, কোনোটিতে দিনের ভোট রাতে হওয়ার গুরুতর অভিযোগ আছে। এ অবস্থায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করা কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আর সেই চ্যালেঞ্জ তারা তখনই করতে পারবে, যখন প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সার্বিক সমর্থন ও সহযোগিতা পাবে। আগের তিনটি নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হওয়ায় কমিশনের প্রতি ক্ষমতাসীনদের চাপ ছিল। বর্তমানে নির্দলীয় ও অন্তর্বর্তী সরকারের অধীন নির্বাচন হওয়ায় সে ধরনের চাপের আশঙ্কা কম। কিন্তু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর চাপ থাকবে, যার আলামত এখনই পাওয়া যাচ্ছে। ইসির কোনো সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলে তাকে প্রতিপক্ষের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করা রাজনৈতিক দলগুলোর অসহিষ্ণু মনোভাবেরই প্রকাশ বলে মনে করি। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি সরকারের জন্য সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে রাজনৈতিক দলগুলোরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া জুলাই সনদের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলো এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দফায় দফায় বৈঠক করেও সমঝোতায় আসতে পারেনি। আমরা মনে করি, নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলোর মনস্তাত্ত্বিক চাপও বাড়ল। নেতারা জুলাই সনদের দাঁড়ি-কমা নিয়ে যতই বাহাস করুন না কেন, জনগণ ভোটের জন্য উš§ুখ। সমঝোতার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকাই মুখ্য। ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য দেশের মানুষ ১৬ বছর সংগ্রাম করেছে। বুকের রক্ত দিয়েছে। এখন যখন সেই ভোটাধিকারের একটি রাস্তা সুগম হয়েছে, সবাই আশায় বুক বেঁধেছেনÑসেই রাস্তায় যেন কোনো কাঁটা বিছানো না হয়। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন এই মুহূর্তে বাংলাদেশের প্রধান জাতীয় স্বার্থ। বিচার ও সংস্কারকে দাঁড় করানো কোনোভাবেই ঠিক হবে না। নির্বাচন যেটা আমাদের সংস্কার সম্পন্ন করার জন্যই দরকার। গণতান্ত্রিক উন্নয়নের মাধ্যমেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করি আমরা। নির্বাচনের মাধ্যমে সংস্কারের যে জায়গায় আমরা পৌঁছেছি, একটি জাতীয় সনদ প্রস্তুত হয়েছে, সেই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের প্রত্যাশাÑজাতীয় সনদের আইনি বাধ্যবাধকতা ও তার বাস্তবায়নের পথ নিয়ে রাজনীতি দলগুলো সন্দেহ সংশয় বিরোধ ও মতদ্বৈধ কাটিয়ে দ্রুত ঐকমত্যে পৌঁছে যাবে। পুরোনো ফ্যাসিবাদের কায়দায় এখন কেউ কেউ নিজেদের মত অন্যদের ওপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন, তারা নিজের মতটাই একমাত্র গ্রহণযোগ্যÑতেমন মানসিকতা নিয়ে একগুঁয়ে আচরণ করছেন। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, কলাম লেখক

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন
Previous Post

রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণেও উদ্যোগ নিতে হবে

Next Post

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: সংযোগ না বিচ্ছিন্নতা?

Related Posts

শি আয়োজিত সম্মেলনে যোগ দিলেন পুতিন ও মোদি
আন্তর্জাতিক

শি আয়োজিত সম্মেলনে যোগ দিলেন পুতিন ও মোদি

ভারতের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের তীব্র সমালোচনা মার্কিন কর্মকর্তার
আন্তর্জাতিক

ভারতের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের তীব্র সমালোচনা মার্কিন কর্মকর্তার

বিক্ষোভের দাবানলে জ্বলছে ইন্দোনেশিয়া সংসদ সদস্যদের ভাতায় কাটছাঁট
আন্তর্জাতিক

বিক্ষোভের দাবানলে জ্বলছে ইন্দোনেশিয়া সংসদ সদস্যদের ভাতায় কাটছাঁট

Next Post
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: সংযোগ না বিচ্ছিন্নতা?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: সংযোগ না বিচ্ছিন্নতা?

Discussion about this post

সর্বশেষ সংবাদ

শি আয়োজিত সম্মেলনে যোগ দিলেন পুতিন ও মোদি

শি আয়োজিত সম্মেলনে যোগ দিলেন পুতিন ও মোদি

ভারতের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের তীব্র সমালোচনা মার্কিন কর্মকর্তার

ভারতের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের তীব্র সমালোচনা মার্কিন কর্মকর্তার

বিক্ষোভের দাবানলে জ্বলছে ইন্দোনেশিয়া সংসদ সদস্যদের ভাতায় কাটছাঁট

বিক্ষোভের দাবানলে জ্বলছে ইন্দোনেশিয়া সংসদ সদস্যদের ভাতায় কাটছাঁট

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: সংযোগ না বিচ্ছিন্নতা?

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: সংযোগ না বিচ্ছিন্নতা?

রাজনৈতিক দলগুলোকে দ্রুতই ঐকমত্যে আসতে হবে

রাজনৈতিক দলগুলোকে দ্রুতই ঐকমত্যে আসতে হবে




 

আর্কাইভ অনুসন্ধান

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 ১২৩৪৫৬
৭৮৯১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  

প্রকাশক ও সম্পাদক ✍ মীর মনিরুজ্জামান

তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৪৮

একটি শেয়ার বিজ প্রাইভেট লি. প্রতিষ্ঠান

(প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রয়োজন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে)

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়

বিএসইসি ভবন (১০ তলা) ॥ ১০২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ॥ ☎ 01720123162, 01768438776

  • ♦ বাংলা টেক্সট কনভার্টার

Copyright © 2025 Daily Share Biz All right reserved. Developed by WEBSBD.NET

No Result
View All Result
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ

Copyright © 2025 Daily Share Biz All right reserved. Developed by WEBSBD.NET