শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫
৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | ২৪ মহর্‌রম ১৪৪৭
  • ♦ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শেয়ার বিজ
আমাদের ওয়েবসাইট সংস্কার চলছে সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত! পুরনো খবর দেখতে আর্কাইভ ভিজিট করুন..
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ
➔ ই-পেপার
No Result
View All Result
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ
No Result
View All Result
শেয়ার বিজ
No Result
View All Result

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: বয়ানের রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ আঞ্চলিক অস্থিরতা

Rodela Rahman Rodela Rahman
শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫.১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
বিভাগ - পত্রিকা, সম্পাদকীয় ➔ প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন
A A
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: বয়ানের রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ আঞ্চলিক অস্থিরতা
0
VIEWS
Share on FacebookShare on TwitterShare on Linkedin

বোরহান উদ্দিন : ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ‘মিথ’ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মুখে বহু আগে থেকেই বিশ্ব শুনে আসছে। ৩৩ বছর আগে ১৯৯২ সালে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে দাঁড়িয়ে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘Within 3 or 5 years we can assume that Iran will become autonomous in its ability to develop and produce a nuclear bomb.’

২০২৫ সালে এসে তিনি বলছেন, সেটা দুই অথবা তিন সপ্তাহের মধ্যেই সম্ভব। ২০১২ সালে জাতিসংঘের ৬৭তম সাধারণ পরিষদে বক্তৃতার সময় নেতানিয়াহু একটি ডায়াগ্রাম প্রদর্শন করে বলেন, ইরান তার পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির তিনটি ধাপের প্রথম পর্যায়ের (০-৭০ শতাংশ) ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে দ্বিতীয় পর্যায়ে (৭০-৯০ শতাংশ) রয়েছে। সর্বশেষ ধাপে যাওয়ার আগে অবশ্যই ইরানকে থামাতে হবে। এজন্য তিনি এক রকম লাল দাগ (Red Line) এঁকে বিশ্ব মোড়লদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন (Israeli PM draws red line for Iran at UN, 2012)।

সম্ভবত এ কারণেই তৎকালীন ওবামা প্রশাসনের নেতৃত্বে ২০১৫ সালে Joint Comprehensive Plan of Action (JCPOA) নামে একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণভাবে সীমিত করা।

এই চুক্তিতে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানি (P5+1 গ্রুপ)। ফলে ইরানকে তিনটি প্রধান শর্ত মেনে নিতে হয়—ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করা, সেন্ট্রিফিউজের সংখ্যা কমানো এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সিকে (আইএইএ) ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাগুলোয় কঠোর নজরদারি করার অনুমতি দেওয়া।

এই শেষ শর্ত থেকেই বোঝা যায়, ইরানের যদি সত্যিই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো আকাঙ্ক্ষা থাকত, তাহলে তারা কখনোই আইএইএ’কে ইরানে তদারকির সুযোগ দিত না, যেখানে ইসরায়েল গোপনে বহু আগেই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

ইউরেনিয়াম বা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কার্যক্রম তদারকির এখতিয়ারপ্রাপ্ত সংস্থা আইএইএ’কে ইসরায়েল কখনোই তার দেশে এসব কর্মযজ্ঞ পর্যবেক্ষণের অনুমতি তো দূরের কথা, এমনকি ইসরায়েলে তাদের প্রবেশের অনুমতি পর্যন্ত দেয়নি। বরং আন্তর্জাতিক আইন এড়িয়ে গিয়ে ছদ্মবেশে নিজেকে পারমাণবিক শক্তিতে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

তবে জেসিপিওএ চুক্তির ফলে ১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লবের পর থেকে ইরান যেসব নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছিল, সেই অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। প্রায় তিন বছরের মতো এই স্থিতাবস্থা বজায় থাকার কারণে ইরানের অর্থনীতি কিছুটা চাঙা হয়।

কিন্তু ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি, হামাস-হিজবুল্লাহ-শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তার অভিযোগ এবং ইসরায়েলি লবির ইন্ধনে ট্রাম্প প্রশাসন ওবামার করা এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে (২০১৫ সালের চুক্তিতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উল্লেখ ছিল না)। যদিও রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরা শুরু থেকেই এই চুক্তির বিরোধিতা করছিলেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্র Maximum Pressure Policy গ্রহণ করে এবং ইরানকে Rogue State (অবাধ্য রাষ্ট্র) হিসেবে আখ্যা দেয়। ফলে পশ্চিমাদের সঙ্গে ইরানের সম্পর্কে আবার ভাটা পড়ে।

প্রশ্ন ওঠে, ইসরায়েল কেন আন্তর্জাতিক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র ইরানের ওপর ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে অতর্কিত হামলা চালায়! এর একটি কারণ হতে পারে, আঞ্চলিক ক্ষেত্রে ইসরায়েল ইরানকে তার ‘অস্তিত্বগত হুমকি’ বলে মনে করে। অন্যটি হতে পারে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে গাজায় চালানো গণহত্যা থেকে মিডিয়া, বিশ্ববাসীর দৃষ্টি এবং আন্তর্জাতিক আলোচনার মূল ফোকাস কৌশলে অন্যদিকে সরিয়ে নেয়া, যেটাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ভাষায় বলা হয় diversionary tactic (Wag the Dog)।

ফলে মধ্যবর্তী এই সময়ে ইসরায়েল গাজায় তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার নীলনকশা আরও নিষ্ঠুরভাবে তৈরি করবে—হোক সেটা ethnic cleansing, genocide বা war crime। যেভাবেই হোক, তারা গাজাকে ফিলিস্তিনশূন্য করবেই, নাহলে কচুরিপানার মতো পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয় ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের ঠেলে দিয়ে আগুনের ওপর দাঁড়িয়ে হলেও ইসরায়েল স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে চাইবে।

সম্প্রতি ফিলিস্তিনশূন্য গাজায় ইসরায়েলি বসতি স্থাপন, বাফার জোন তৈরি এবং বিলাসবহুল টুরিস্ট স্পট স্থাপনের এমনই ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গাভীর। তবে ইরান তার আত্মরক্ষামূলক নীতি অনুযায়ী ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩’ নামে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে সমুচিত জবাব দেয়ার চেষ্টা করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন অপারেশন মিডনাইট হ্যামার পরিচালনার এক দিন পরই যুদ্ধবিরতির জন্য তৎপর হয় এবং অবশেষে কাতারের দ্বারস্থ হয়? আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টি এমন মনে হতে পারে, ইউরেনিয়াম-সমৃদ্ধ ইরানি পারমাণবিক স্থাপনাগুলো বাঙ্কার বাস্টার বোমার মাধ্যমে সফলভাবে ধ্বংস করতে পেরেছে বলেই যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতির ডাক দিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। যদিও ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার বিষয়টি ইরানের জন্য একটি নীতিগত বিজয় বলে মনে করছেন অনেকেই।

তবে বাস্তববাদী বিশ্লেষণে বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরা উচিত। যেমন, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রক্সি উপস্থিতি (proxy presence) বজায় রাখতে ইসরায়েল যতটা গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে কাজ করে, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই অঞ্চলে উপস্থিত প্রায় ১৭টির মতো মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ও এয়ারবেস।

কারণ জ্বালানি সরবরাহ, সাপ্লাই চেইন এবং পশ্চিমা তেল কোম্পানিগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এসব এয়ারবেস কৌশলগতভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ফলে এসব অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান আঁচ করতে পেরে ইরান যখন কাতারের আল-উদেইদ বিমানঘাঁটিতে ‘Operation Glad Tidings of Victory’ সাংকেতিক নামে নামমাত্র হামলা চালায়। তখনই যুক্তরাষ্ট্র তড়িঘড়ি করে যুদ্ধবিরতির জন্য উদ্যোগী হয়ে ওঠে। বলা চলে, ইরান যে হিম্মত দেখিয়েছে, সেটা একরকম সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আক্রমণের শামিল।

দ্বিতীয়ত, যুদ্ধ চলাকালে ইরান তার নিয়ন্ত্রণাধীন হরমুজ প্রণালি (বিশ্বের প্রায় ৪০ শতাংশ তেল বাণিজ্য হয় এই প্রণালি দিয়ে) বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিলে তেল বাণিজ্যের ওপর অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল পারস্য উপসাগরীয় দেশ ইরাক, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত চরম বিপাকে পড়ে যায়। কারণ এসব দেশে তেল বা পণ্যবাহী জাহাজের প্রবেশ এবং প্রস্থান উভয় ক্ষেত্রেই যাতায়াতের জন্য একমাত্র এই প্রণালির ওপর নির্ভরশীল। ফলে হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে একদিকে যেমন এই দেশগুলো পণ্য আমদানি-রপ্তানির পথ হারাবে, তেমনি বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি হবে। ফলস্বরূপ দেশগুলো যুদ্ধের ইতি টানার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের সঙ্গে সমান্তরাল কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে শুরু করে।

তৃতীয়ত, যখন কোনো দেশ হঠাৎ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তখন জনমত গঠনের পাশাপাশি সেই জনমতকে কাজে লাগিয়ে যুদ্ধের বৈধতা অর্জন করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ইরানের ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের সমর্থন ছিল প্রবল। বহু মানুষকে রাস্তায় নেমে ‘Death to Israel, Death to America’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে। অন্যদিকে ইসরায়েল একসঙ্গে তিনটি ফ্রন্টে জড়িত ছিল—গাজা, ইরান ও লেবানন। ফলে ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার রাজনৈতিক বৈধতা না পেয়ে ইসরায়েল দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের শরণাপন্ন হয় এবং যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে সম্মতি জানায়।

এ ছাড়া গত শুক্রবার মার্কিন সিনেটে ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস হয়, যেখানে জীবাশ্ম জ্বালানির সরবরাহ বাড়ানোর কথা আগেই উল্লেখ ছিল। ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির আঁতুরঘর হিসেবে পরিচিত মধ্যপ্রাচ্যকে ঘিরে ট্রাম্প প্রশাসনকে নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে হয় এবং শেষ পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে জড়িয়ে না গিয়ে কৌশলগতভাবে পিছু হটতে বাধ্য হয়।

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ সমাপ্তির ভবিষ্যৎ পরিণতি হতে পারে—প্রথমত, দুই দেশই এই ১২ দিনের যুদ্ধে নিজেদের সামরিক সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা মূল্যায়নের সুযোগ পেয়েছে। ফলে তারা এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে নিজেদের সামরিক শক্তি আরও আধুনিক ও কার্যকর করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি জোরদার করবে।

দ্বিতীয়ত, এডেন উপসাগর এবং লোহিত সাগর অঞ্চলে ইরান-সমর্থিত হুতি ও ইসরায়েলের উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পাবে। যেমন চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে হুতিদের আক্রমণে (ম্যাজিক সি এবং ইটার্নিটি সি) দুটি জাহাজ লোহিত সাগরে ডুবে যেতে দেখা যায়, যা ব্লু ইকোনমি বা সমুদ্রনির্ভর অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য একটি সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ। এমনকি সামুদ্রিক বায়োডাইভার্সিটিকেও এটি হুমকিতে ঠেলে দেবে।

যদিও ইয়েমেনের হুতিরা দাবি করছে, জাহাজ দুটি ইসরাইলগামী ছিল বলে তারা আক্রমণ করেছে। পাল্টা জবাব হিসেবে ইয়েমেনের তিনটি বন্দর ও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালায় ইসরায়েল। অন্যদিকে লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল হয়ে ভারত মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগরের মধ্যে একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ হিসেবে কাজ করছে বাব এল মান্দেব প্রণালি। এটি ইউরোপ ও এশিয়ার বাণিজ্যের জন্য দ্রুততম রুট হিসেবে বিবেচিত।

কিন্তু হুতি আক্রমণের ভয়ে পণ্যবাহী বিশাল জাহাজগুলোকে আফ্রিকা মহাদেশ ঘুরে, অর্থাৎ উত্তমাশা অন্তরীপ দিয়ে যাত্রা করতে হবে। এতে করে বড় বড় কার্গো জাহাজগুলোকে অতিরিক্ত ছয় হাজার মাইল পথ পারি দিতে হবে। ফলে জ্বালানি খরচ বাড়বে এবং পণ্যের গুণগত মান বজায় রাখা কষ্টসাধ্য হবে। সেক্ষেত্রে এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে পরে আবারও ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একযোগে হুতি দমনের জন্য হামলা অব্যাহত রাখতে পারে।

তৃতীয়ত, ১৭তম ব্রিকস সম্মেলনে সবকটি দেশ ইরানের প্রতি সমর্থনের পাশাপাশি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণাত্মক হামলার নিন্দা জানিয়েছে। বিশ্বের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি মানুষ এই দেশগুলোয় বসবাস করে এবং বৈশ্বিক উৎপাদনে ৪০ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখে। ফলে ব্রিকসের মাধ্যমে ইরান তার পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কিছুটা প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করবে।

লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, একদিকে সৌদি আরব যেমন ব্রিকসের সদস্য, তেমনি পারস্য উপসাগরীয় জোট জিসিসির নেতৃস্থানীয় দেশও বটে। সে ক্ষেত্রে ইরান জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা এবং আঞ্চলিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য তৎপরতা চালাতে পারে। গত ৮ জুলাই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির জেদ্দা সফর এবং সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক এমনটিই স্পষ্ট করে তোলে।

এ ছাড়া রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে ইরান তার কূটনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে চাইবে, যেন সংকটকালীন মিত্র হিসেবে তাদের  পাশে পাওয়া যায়—হতে পারে সেটা অর্থনৈতিক বা সামরিক। এরই মধ্যে ইরান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে চীনের কাছ থেকে ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য মিসাইল গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া মার্কিন জ্বালানি সংস্থার মে মাসের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের প্রায় ৯০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল ও কনডেনসেট রপ্তানি হয় চীনে।

অন্যদিকে যুদ্ধ চলাকালে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রাশিয়া সফর এবং পুতিনের সঙ্গে বৈঠক দুদেশের পারস্পরিক স্বার্থ ও উদ্দেশ্যকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে। বিপরীতে ইসরায়েলের দিকে যত ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা মিসাইল ছুঁড়েছে ইরান, তার প্রায় ২২ শতাংশ ইসরায়েলে পৌঁছানোর আগেই জর্ডান তার আকাশসীমায় ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে ইসরায়েল তার মিডল ইস্ট মিত্র মনে করে জর্ডানকে আরও বেশি শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে চাইবে।

ইরানে ইসরায়েলের আক্রমণ আরেকটি বিষয় স্পষ্ট করে যে, মধ্যপ্রাচ্যে কেউ যদি ইসরায়েলের সমকক্ষ হয়ে পাওয়ার ব্যালান্স বজায় রাখার চেষ্টা করে, তাহলে ইসরায়েল সেটা মেনে নেবে না। যেমন টার্কি টুডের একটি আর্টিকেল অনুযায়ী, একজন সিনিয়র ইসরায়েলি কর্মকর্তা ইউএস কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তুরস্কের কাছে  এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রির প্রস্তাব বাতিল করা হয়।

তবে এটা নিশ্চিত বলা যায়, নেতানিয়াহু যত দিন ক্ষমতায় থাকবেন, তত দিনই তিনি সম্ভাবনাময় ইসলামি রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে Islamic Militants বা Islamic Extremists-এর নানা ধরনের ন্যারেটিভকে হাতিয়ার করে হামলা চালানোর কৌশল অবলম্বন করবেন। তার লেখা বই ‘Fighting Terrorism’ এই প্রবণতার এক জীবন্ত উদাহরণ। এর পাশাপাশি, তিনি State Actor ও Non-State Actor উভয়েরই প্রধান নেতাদের আগের মতো আবারও টার্গেট করে নেতৃত্বশূন্য বা মেধাশূন্য করে দেয়ার কৌশল নিতে পারেন, যেটাকে সামরিক পরিভাষায় বলা হয়, Decapitation Strategy।

যুদ্ধ ও সংঘাত এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করে, যেখানে শান্তিপ্রিয় নাগরিকরাও নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ফলে উভয় দেশের পক্ষে সম্ভাবনাময় মানবসম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো অনিশ্চিত হয়ে উঠবে। সর্বশেষ যে বিষয়টি তা হলো—ইরান যদি আইএইএ চুক্তি থেকে বের হয়ে আসে, তাহলে এই পারমাণবিক শক্তি সংস্থা আর ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় পর্যবেক্ষণ বা নজরদারি করার সুযোগ পাবে না, যেটা ২০১৮ সালে জেসিপিওএ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র বের হয়ে যাওয়ার পরও অব্যাহত ছিল। ফলে নতুন করে আবার নিউক্লিয়ার ক্রাইসিস দেখা দিতে পারে, যা এই অঞ্চলটিকে আরও বেশি অস্থিতিশীল করে তুলবে।

রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

 

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন
Previous Post

‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে সারাদেশে নিহত ৬৭

Next Post

২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর  প্রত্যাহার গার্মেন্টস খাতের 

Related Posts

নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে ইউক্রেন
আন্তর্জাতিক

নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে ইউক্রেন

ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক, ঝুলে আছে একীভূতকরণ
অর্থ ও বাণিজ্য

ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক, ঝুলে আছে একীভূতকরণ

বাণিজ্য চুক্তির খুব কাছাকাছি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক

বাণিজ্য চুক্তির খুব কাছাকাছি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

Next Post
২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর  প্রত্যাহার গার্মেন্টস খাতের 

২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর  প্রত্যাহার গার্মেন্টস খাতের 

Discussion about this post

সর্বশেষ সংবাদ

নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে ইউক্রেন

নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে ইউক্রেন

ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক, ঝুলে আছে একীভূতকরণ

ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক, ঝুলে আছে একীভূতকরণ

বাণিজ্য চুক্তির খুব কাছাকাছি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

বাণিজ্য চুক্তির খুব কাছাকাছি ভারত-যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার শীর্ষে ও জন্মহার তলানিতে

দক্ষিণ কোরিয়ায় আত্মহত্যার হার শীর্ষে ও জন্মহার তলানিতে

ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র খরা আমন রোপণ ব্যাহত

ঠাকুরগাঁওয়ে তীব্র খরা আমন রোপণ ব্যাহত




 

আর্কাইভ অনুসন্ধান

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 ১২৩৪৫
৬৭৮৯১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

4141758383300286




প্রকাশক ও সম্পাদক ✍ মীর মনিরুজ্জামান

তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৪৮

একটি শেয়ার বিজ প্রাইভেট লি. প্রতিষ্ঠান

(প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রয়োজন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে)

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়

বিএসইসি ভবন (১০ তলা) ॥ ১০২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ॥ ☎ +৮৮-০২-৫৫০১১৮৪১

  • ♦ বাংলা টেক্সট কনভার্টার

Copyright © 2025 Daily Share Biz All right reserved. Developed by WEBSBD.NET

No Result
View All Result
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ

Copyright © 2025 Daily Share Biz All right reserved. Developed by WEBSBD.NET