প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম : প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে বাণিজ্য বাড়ানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের হল রুমে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত ‘মিটিং উইথ জাম কামাল খান ও শেখ বশিরউদ্দীন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে গতকাল শুক্রবার তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘সরকার আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বৃদ্ধিসহ বাণিজ্য সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে যতগুলো দেশের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া সম্ভব, ততগুলো দেশের সঙ্গে আমরা সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছি। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানো হবে।’
চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার পাশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, পাকিস্তান হাইকমিশনের ট্রেড ইনভেস্টমেন্ট অ্যাটাশে জাইন আজিজ, সিসিসিআইয়ের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এমএ সালাম, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এরশাদ উল্লাহ, বাংলাদেশ স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আলী হোসাইন আকবর আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ব্যবসায়ী নেতারা চট্টগ্রামের সঙ্গে করাচির সরাসরি বিমান পরিবহন ও সামুদ্রিক জাহাজে পণ্য পরিবহন চালু করা এবং শিপ বিল্ডিং খাতে সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির আহ্বান জানান। এর মাধ্যমে দুদেশের বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী হবে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দুদেশের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী, যার মধ্যে দিয়ে দুদেশের মানুষের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। আমরা আমাদের চ্যালেঞ্জ জানি, এবার আমাদের সামনে এগোতে হবে।
‘দুদেশের মানুষ একে অপরকে জানে, একে অপরের সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত। আমরা যদি একটি সঠিক ব্যবসায়িক রোডম্যাপ তৈরি করতে পারি, তাহলে অবশ্যই ব্যবসা-বাণিজ্যে অগ্রগতি হবে। তবে এর জন্য জয়েন্ট ভেঞ্চার কোলাবরেশন বাড়াতে হবে।’
গ্লোবাল ইকোনমিক ট্রেন্ড দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে বলে উল্লেখ করে কামাল খান বলেন, ‘আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে বাণিজ্য বাড়ানোর।’ তিনি বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং, লেদার, ফুটওয়্যার, ফার্মাসিউটিক্যালস, গার্মেন্ট প্রভৃতি খাতের বাণিজ্য বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী দুবছরের জন্য একটি বাণিজ্য রোডম্যাপ তৈরি করব। এর জন্য জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে। শুধু সরকারের সঙ্গে সরকার নয়, দুদেশের ব্যবসায়ীরা যেন পারস্পরিক সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি করতে পারেন, সে বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। দুদেশের অ্যাভিয়েশন অথোরিটি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঢাকা-করাচি সরাসরি বিমান চালু করতে পারে বলে এ সময় তিনি উল্লেখ করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘আমরা বিক্রয় প্রবৃদ্ধি এবং প্রতিযোগিতা মূল্যে আমদানি করার লক্ষ্যে কাজ করছি। আমার পাকিস্তানি প্রতিপক্ষের সঙ্গে সুন্দর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমদানি ও রপ্তানি উভয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করাসহ যেসব খাতের কথা তিনি উল্লেখ করলেন, এর বাইরেও নানা খাত নিয়ে আমরা কাজ করছি। সব ব্যবসায়ীর সামগ্রিক শক্তিতে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি আরও উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’
পরে তারা সীতাকুণ্ডে কবির শিপ রি-সাইক্লিং ইয়ার্ড পরিদর্শন এবং তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

Discussion about this post