পতনেও আগ্রহের শীর্ষে পাট খাত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে গতকাল পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক কমেছে। সেইসঙ্গে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমেছে। তবে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের পতনেও বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ফের উঠে এসেছে পাট খাতের শেয়ার। ফলে আলোচিত খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এর আগের কার্যদিবসে খাতটির শেয়ারে রোববার-সোমবার উত্থানের পর পতন হয়। এরপর দর বৃদ্ধির দিক থেকে গতকাল দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিরামিক খাত। গতকাল শেয়ারদর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাত।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল আগ্রহ বেশি থাকা পাট খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ২০ শতাংশ। এদিন খাতটিত মোট তিনটি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া সবগুলোর শেয়ারের দাম বেড়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিরামিক খাতে গতকাল দর বেড়েছে দশমকি ২০ শতাংশ। খাতটিতে গতকাল মোট পাচটি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে একটির শেয়ারদর বেড়েছে এবং বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল।

গতকাল দর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় স্থানে থাকা ভ্রমণ খাতে দশমিক ২০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়েছে। আলোচ্য খাতে গতকাল চারটি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে একটির দর বেড়েছে এবং একটি ছাড়া বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। এছাড়া গতকাল জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, মিউচুয়াল ফান্ড, টেলিকমিউনিকেশন, সাধারণ বিমা এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় আইটি খাতে শেয়ারদর কমেছে। খাতটিতে গতকাল শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ। খাতটিতে গতকাল মোট ১১টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দুটি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল এবং বাকি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। গতকাল ১ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমে। এরপর ছিল সেবা ও আবাসন খাত। গতকাল শেয়ারদর কমায় তৃতীয় স্থানে থাকা কাগজ ও মুদ্রণ খাতে দর কমেছে দশমিক ৯০ শতাংশ। 

অপরদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। খাতটিতে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৪ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ১১ দশমিক ২০ শতাংশ লেনদেন হওয়া জ্বালানি খাত রয়েছে তৃতীয় স্থানে। গতকাল চতুর্থ স্থানে থাকা খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৯ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১০ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বা  দশমিক ১৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৬০ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ২ দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১৬ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বা  দশমিক ১৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৭২ দশমিক ৪২ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২০৮ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে।

ডিএসইতে গতকাল ৪৩০ কোটি ২০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৮৬ কোটি ২১ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল ৬১৬ কোটি ৪১ লাখ টাকার। গতকাল ডিএসইতে ৩৪১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ২৭টির বা ৭ দশমিক ৯২ শতাংশের, শেয়ারদর কমেছে ৬৮টির বা ১৯ দশমিক ৯৪ শতাংশের এবং ২৪৬টির বা ৭২ দশমিক ১৪ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৫৩ দশমিক ৫০ পয়েন্টে। সিএসইতে গতকাল ১৪০টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮টির দর বেড়েছে, কমেছে ৪৩টির আর ৭৯টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল সিএসইতে ১৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।